চাপ প্রথম থেকেই ছিল। ধর্ষণের অভিযোগ সালিশি সভায় মেটেনি । স্বাভাবিকভাবেই থানায় গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তার জেরেই তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল অভিযুক্ত ও নির্যাতিতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনায় ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ, ঘটনার মূল পান্ডা কলকাতা পুলিশের এক কর্মী। ওই কর্মী, তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য ও নির্যাতিতার স্বামীকে শনিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা গিয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতা কলকাতা পুলিশের ওই কর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। ওই কর্মী পুলিশের গাড়ির চালক। ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে ওই যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন নির্যাতিতা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার দুই ছেলেমেয়ে। স্বামী কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন।
নির্যাতিতা অভিযোগ করেন, ৫ সেপ্টেম্বর রাত ২টো নাগাদ অভিযুক্ত পুলিশকর্মী তাঁর ঘরে ঢোকে। মহিলা মেয়েকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। মহিলার মুখ চেপে ধরে তাঁকে পাশের ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের কাছে নির্যাতিতা জানান, ধর্ষণের পরে তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, গ্রামে সালিশি ডেকে বিষয়টি মেটানোর জন্য ‘চাপ দেওয়া হয় অভিযুক্তের তরফে।
জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার পর মহিলা আবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান। তার পরেই শুক্রবার তাঁর শ্বশুরবাড়ির দোতলার ঘরে গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে। দেহ ময়না তদন্তের জন্য বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নির্যাতিতার ভাই জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই তাঁর দিদিকে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। বাধ্য হয়ে তিনি ভাড়া বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। এ বারে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী এবং তার পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী মিলে দিদির স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে দিদিকে খুন করেছে বলে তাঁর অভিযোগ।