কলকাতায় পুরনো হলুদ-কালো ট্যাক্সির ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার।রাজ্যের পরিবহন দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেউ যদি তাঁর কমার্শিয়াল সেডান বা হ্যাচব্যাক হলুদ রঙের করেন এবং সরকারের বেঁধে দেওয়া কিছু শর্ত মানেন, তা হলে সেই সব গাড়িতে মিটার বসানোর অনুমতি দেওয়া হবে। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের দাবি, মাইলেজ থেকে চালানোর সুবিধে বা মেনটেন্যান্স একাধিক কারণে বিভিন্ন কোম্পানির সেডান এবং হ্যাচব্যাক, অ্যাম্বাসাডরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এই সব গাড়ি চালানো যেমন সুবিধে, তেমনই যাত্রীরা অ্যাম্বাসাডরের তুলনায় অনেক বেশি আরামে যাতায়াত করতে পারেন। সরকার বেশ কিছু ছাড় দিলেও ট্যাক্সি-মালিক এবং চালকদের একটা বড় অংশের দাবি, মিটারে গাড়ি চালিয়ে তেমন লাভ নেই। ট্যাক্সির মিটারও আজকাল তেমন ভাবে আর তৈরি হচ্ছে না। আবার এটাও সত্য যে, ট্যাক্সিচালকরা মিটারে যেতে চান না। কেননা তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন হলো ট্যাক্সির ভাড়া বাড়েনি, অথচ তেলের দাম চড়চড় করে বেড়েছে। এই অবস্থায় পুরোনো রেটে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। আবার যাত্রীদের দাবি, হলুদ ট্যাক্সির চেয়ে অ্যাপ ক্যাব ভালো। কেননা সেখানে সঙ্গে দরদাম ঘিরে ঝামেলার সম্ভাবনা কম। আবার যারা হলুদ ট্যাক্সি চালানো ছেড়ে অ্যাপ-ক্যাব।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এত দিন অ্যাম্বাসাডর ট্যাক্সিগুলিকে মিটার বসানোর অনুমতি দেওয়া হলেও এ বার থেকে কেউ সেডান এবং হ্যাচব্যাক হলুদ রঙের করলে, তাতেও আবেদনের ভিত্তিতে মিটার বসানোর অনুমতি দেওয়া হবে। রাজ্যের পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন জানিয়েছেন, সেডান ও হ্যাচব্যাক গাড়িকে মিটার ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করতে হলে গাড়িতে চালক- সহ অন্তত ৫ জনের বসার জায়গা থাকতে হবে। ইঞ্জিনের ক্যাপ্যাসিটি হতে হবে ৯০০-১১৫০ সিসি। গাড়িতে পেট্রল, সিএনজি এবং ডিজেল- এই তিন ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করার সংস্থান থাকতে হবে। এখন নতুন করে কেউ হলুদ ট্যাক্সি আর কিনতেও চাইছেন না। কিন্তু মিটার হলো সরকারের বেঁধে দেওয়া ভাড়া। যেটা সরকার নিজে থেকে তুলে দিতে পারে না। তাই সরকারকে মিটার বসানোর রাস্তা খোলা রাখতেই হবে। এ বার মালিক বা চালকরা মিটারে গাড়ি চালাবেন না অ্যাপের মাধ্যমে, সেটা তাঁদের ব্যাপার।
আরও পড়ুন- কুণালের কাছে আর জি করের সাসপেন্ডেড ইনটার্নরা, তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন