জঙ্গল আর পাহাড় ঘেরা ডুয়ার্সের একটি অন্যতম ক্ষুদ্র জনজাতি ‘অসুর’। অসুরদের সিংহভাগই চা বাগানে কাজ করেই সংসার চালায়। পুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায় পাওয়া বোনাস নিয়ে দুর্গাপূজোয় সামিল হবেন এবার তারা।
উত্তরের এই জনজাতির মানুষেরা বিশ্বাস করে করেন, দেবীদুর্গা তাঁদের পূর্বপুরুষ মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। সেই কারণে দুর্গাপুজোয় তাঁরা শামিল হতেন না। দুর্গাপুজোর কয়েকদিন নিজেদেরকে ঘরবন্দি করে রাখতেন অসুর সম্প্রদায়ের ৮ থেকে ৮০ সকলেই। কিন্তু সময় পালটেছে। পাল্টাচ্ছে পরিস্থিতিও।
জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের পাহাড়ে ঘেরা ক্যারন চা বাগান। এই চা বাগানেই থাকেন অসুর সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার। একসময় পুজোর কয়েকটা দিন নিজেদেরকে ঘরবন্দি রাখতেন।কালো কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখতেন বাড়ি। কিন্তু এবার শুধু ঘর থেকে মুখ বার করবে না, বরং দুর্গা প্রতিমা মুখ দেখতে মণ্ডপেও যাবেন। ক্যারন চাবাগানের কারি লাইন, খাপরা লাইন, মতু লাইনে এদের বসবাস। এই গ্রামের বাসিন্দা সরিতা অসুর বলেন, “একসময় দুর্গাপুজোর সময় বাড়ি থেকে বের হতাম না। কিন্তু এখন পুজোর সময় মণ্ডপে যাই। আমাদের এলাকায় দুর্গাপুজোর আয়োজন হয়।” শুধু নাগরাকাটাই নয়, বানারহাট, মেটেলি-সহ কিছু এলাকায় অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা বসবাস করেন। মূলত চা বাগানেই কাজ করেন এই জনজাতির মানুষেরা। তবে অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা যে অনার্য জনগোষ্ঠীর মানুষ তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারও। এই অসুর সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশ্বাস, তারা দুর্গার হাতে বধ হওয়া অসুরের বংশধর। সেই কারণে তারা দুর্গা ঠাকুরের মুখ দেখতেন না। শুধু তাই নয়, দুর্গা পুজোর সময় অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা শোকের গান গাইতেন। নিজেদের ঘর বন্দী রাখতেন তবে এখন অসুর সম্প্রদায়ের অনেক মানুষই দুর্গাপুজোয় শামিল হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন- পূর্ণরাজ্য মর্যাদা বিলোপের জবাব কাশ্মীরে, হরিয়ানায় কোনও মতে টিকল বিজেপির গদি