ধ্রুপদী ভাষার তকমা মেলার পরই রাজ্যের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানো বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার পুনরায় উদ্যোগী হচ্ছে। রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি যাতে তাদের সিলেবাসে বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করে সেজন্য দুই কেন্দ্রীয় বোর্ড আইসিএসসি ও সিবিএসই র কাছে রাজ্য সরকারের তরফে অনুরোধ জানানো হবে। এজন্য খুব শীঘ্রই দুই বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের সিবিএসই আইসিএসিস্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। দিন কে দিন সেই অভিযোগ বেড়ে চলেছে। ২০১৭ সালের মে মাসে সরকার ঘোষণা করেছিল, বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানো বাধ্যতামূলক হবে। তবে নানা বিতর্কের ফলে সেই ঘোষণা কার্যকর করা যায়নি। কেননা রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ‘বাধ্যতামূলক’ ভাবে ওপর থেকে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। আর তাই ধ্রুপদী বাংলা ভাষাকে এবার যাতে রাজ্যের সিবিএসই আইসিএসি স্কুলগুলিতে পড়ানো হয় তার জন্য উদ্যোগী হবে রাজ্য সরকার। ব্রাত্য জানিয়েছেন, ‘আমরা মনে করি সব কিছুই আলোচনার মাধ্যমে করা সম্ভব। তাই বেসরকারি স্কুলগুলি যে সব বোর্ডের অধীনে অর্থাৎ সিবিএসই ও আই সি এস ই তাদের সঙ্গে আমরা দ্রুত আলোচনা শুরু করছি যাতে বাংলা পড়ানোর বিষয়টা বোর্ডের তরফ থেকেই সাজেস্ট করা হয়।’ ব্রাত্য এই বিষয়টিকে অভিভাবকদেরও ভেবে দেখার অনুরোধ করেছেন।
তামিলনাড়ু, কর্নাটকের পাশাপাশি উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতেও যে ভাবে মাতৃভাষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা নিয়ে নেটিজেনদের একাংশ সরব। এই পরিস্থিতিতে সিবিএসই আইসিএসি বোর্ডের স্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানো নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকেই। তবে অনেকে এটাও বলছেন যে, শুধুমাত্র সিবিএসই আইসিএসি বোর্ডের স্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বিশেষ কোনও লাভ হবে না। বরঞ্চ সরকারের উচিত বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির জন্য আরও পরিকাঠামো উন্নয়ন করা, স্কুল শিক্ষক নিয়োগ করা। সেই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি কাজে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা দরকার। তা হলে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বাংলা পড়ার ইচ্ছে বাড়বে।
আরও পড়ুন- দিল্লির আরামবাগের মণ্ডপে অভিনবত্ব, ‘পরিত্যক্ত মা’য়ের আলোয় উজ্জ্বল