দিল্লির আরামবাগের মণ্ডপে অভিনবত্ব, ‘পরিত্যক্ত মা’য়ের আলোয় উজ্জ্বল

0
1

কথায় আছে ‘কুপুত্র যদি হয়, কুমাতা কদাপি নয়’। বাংলা ভাষায় ছোট্ট শব্দের সবচেয়ে বহুল অর্থ মনে হয় “মা” (Mother)। যার জন্যই এই পৃথিবী দেখা। তবে মাঝেমধ্যেই এই পৃথিবীর এক অন্যরূপ সন্তানরা দেখায় মাকে, বৃদ্ধকালীন সময়ে তাঁকে পরিত্যাগ (abandonment) করে। সন্তানেরা বৃদ্ধ মাকে রাস্তাঘাটে, স্টেশনে কিংবা  বৃদ্ধনিবাসে ফেলে গেছেন—এ ধরনের খবর এখন আর আমাদের শিউরে তোলে না। বিষয়টা অনেক গা সওয়া হয়ে গেছে। মথুরা, বৃন্দাবন, বেনারসের মত তীর্থস্থল চোখ রাখলে এমন বহু মা-র দেখা পাওয়া যায়। যারা নিজের ছেলে-মেয়ের সংসারেই বোঝা হয়ে উঠেছিল একদিন। অনেক আবার সংসারের অত্যাচারে নিজের থেকেই ছেড়েছে নিজের শেষ আস্থানা। এবার এই হতভাগ্য পরিত্যক্ত মায়েদের কয়েকজনকে নিজেদের পুজো মণ্ডপে নিয়ে এসে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে চলেছে দিল্লির আরামবাগ(Delhi Aram Bagh) পুজো সমিতি৷

এই পুজো কমিটি প্রতিবারই ব্যতিক্রমী ভাবনার শরিক৷ ইতিপূর্বে তাঁরা সুন্দরবনের (Sundarbans) বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাঘের হাতে নিহত জেলে, মধু চাষীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মান প্রদর্শন করেছিল। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লির আরামবাগ পুজো সমিতি৷ আর এবার নিজেদের পুজোর ৩৬ তম বর্ষে তাদের পুজোর থিম ‘পরিত্যক্ত মা’৷ এই বিষয়ে পুজো কমিটির চেয়ারম্যান অভিজিত্‍ বসু নিজেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাদের এই ব্যতিক্রমী থিমের৷ তাঁর কথায়, ” জীবনে প্রথম যে শব্দটি উচ্চারণ করেছিলাম, সেটি হল ‘মা’৷ এখন যখন মা- দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হয়েছি আমরা , তখন বারবারই মনে হচ্ছে পরিত্যক্ত মা-দের জন্য কিছু করতে হবে৷ তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে৷ এই ভাবনা থেকেই সৃষ্ট আমাদের এই বছরের পুজোর থিম৷”

অভিজিত্‍ বাবু জানান,” বেনারস, মথুরা, বৃন্দাবন সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৫ জন ‘মা’ আসবেন তাদের পুজো মন্ডপে৷ তাঁদের আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও পাশে থেকে চিকিত্‍সার সব ব্যবস্থা করা হবে৷ পুজোর কদিন এই পরিত্যক্ত মা-রাই পুজো মন্ডপ আলো করে রাখবেন৷ এই মা-দের আশীর্বাদেই আগামীর রূপরেখা তৈরি করবে এই পুজো কমিটি”।

আরও পড়ুন- অনশনে আর জি করের চিকিৎসকরা কোথায়? চাপের মুখে সিদ্ধান্ত বদল!