সিপিএমের (CPIM) জাতীয় ও রাজনীতিতে একাংশের গাজোয়ারিতে এখনও পর্যন্ত বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পায়নি দেশ। তবে এবার সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন কোনও বঙ্গসন্তান। সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণের জন্য ভাবা হচ্ছে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের (Md Selim) নাম। CPI থেকে CPIM তৈরির পরে ৬০ বছর এই প্রথম বাঙালি সাধারণ সম্পাদক পেতে পারে দল।
অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন অজয় ঘোষ। তার পরে আর সিপিএমের কোনও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকাকালীন কারও মৃত্যু হয়নি। ফলে সাধারণ সম্পাদক মৃত্যু হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে দলীয় সংবিধানে কোনও নিয়ম নেই। এবার নেতৃত্ব কে সামলাবেন- তা নিয়ে চিন্তায় পলিটব্যুরো। সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুর পরে আগামী ছ-মাসের জন্য সিপিএম কাউকে ‘ভারপ্রাপ্ত’ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়নি। তবে ‘সমন্বয়ক’ হিসেবে কাজ করবেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত (Prakash Karat)। আগামী এপ্রিলে পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত সামগ্রিক ভাবে পলিটব্যুরো যৌথ ভাবে দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। যদিও মানিক সরকার ও কেরালার নেতাদের মতে, প্রকাশের অভিজ্ঞতার জন্য তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক। কিন্তু সিপিআইএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তিনদফার পরে সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন না। এর আগে তিন দফায় দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কারাত।
সিপিএমের অন্দরের খবর, পরের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের নাম ভাবা হয়েছে। তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে ভাবার জন্য রাজি হলে তিনিই হবেন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। তা হলে ইতিহাসে প্রথম এক বঙ্গ সন্তান সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক হবে।
সিপিএম সূত্রে খবর, দিল্লির এমসে চিকিৎসাধীন সীতারামের শারীরিক পরিস্থিতি যখন অতি সঙ্কটজনক, তখন বার্তা আসে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সেলিম দিল্লিতে গিয়ে পার্টি হাল ধরার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তখন বাংলার সিপিআইএম তখন রাজ্য সম্পাদককে ছাড়তে রাজি হননি। গত শুক্র ও শনিবার সিপিএমের পলিটব্যুরোর বৈঠকের আগেও সেলিমকে রাজি করানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন সেলিম।
সেলিমকে চাইছে পলিটব্যুরোর একটা বড় অংশ কারণ সংসদীয় রাজনীতিতে সেলিমের অভিজ্ঞতা রয়েছে। দু-বার রাজ্যসভা এবং দু-বার লোকসভার সাংসদ ছিলেন। রাজ্যে মন্ত্রীও ছিলেন। ছিলেন সিপিএমের যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি, সর্বভারতীয় স্তরে রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতা হতে গেলে একাধিক ভাষা জানা প্রয়োজন। বাংলার ছাড়াও ইংরেজি, হিন্দি এবং উর্দুতে সাবলীল সেলিম। বয়সের কারণেও পলিটব্যুরোর অনেকে সেলিমকে চাইছেন। সব মিলিয়ে এখন মহম্মদ সেলিম সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে। সব ঠিক থাকলে আগামীতে হয়তো সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক পদে দেখা যেতে পারে এই বঙ্গ সন্তানকে।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানিতে উঠল বাম আমলের চিকিত্সক খুনের প্রসঙ্গ!