বেনজির। তন্ত্র সাধনার নাম করে এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ। আর তার দায়ে এক তান্ত্রিককে ফাঁসির সাজা দিল আরামবাগ মহকুমা আদালত।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে শিশুটির দিদিমাকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ২০১৮ সালের। আরামবাগ মহকুমার খানাকুলের রাধাবল্লভপুর গ্ৰামে সুশীলা মাঝির এক মেয়ে রোগে ভুগছিলেন। রোগ সারানোর জন্য ওই এলাকার এক তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অভিযুক্ত সুশীলা।তখন ওই তান্ত্রিক সুশীলাকে বলে, যদি কোনও শিশুকে নরবলি দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে তার মেয়ে রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে সুশীলা নিজের নাতনিকে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যায়।
ওই শিশুকন্যাকে তন্ত্র সাধনার নামে হাত বেঁধে এবং মুখে কাপড় বেঁধে ধর্ষণ করে খুন করা হয়।তারপর এলাকারই ঘন্টু সিংয়ের বাড়ির পাশে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর ফেলে দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা শিশু কন্যাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু না পেয়ে খানাকুল থানায় অভিযোগ জানানো হয়।তদন্তে নামে খানাকুল থানার পুলিশ। সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশু কন্যার দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই নানা সাক্ষ্য প্রমাণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তান্ত্রিক দম্পতি মুরারি পন্ডিত ও তার স্ত্রী সাগরিকা পন্ডিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় শিশুকন্যার দিদিমাকেও।
সেই মামলা দায়ের হয় আরামবাগ মহকুমা আদালতে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক কৃষাণকুমার আগরওয়াল মুরারির স্ত্রী সাগরিকাকে ফাঁসির সাজা দেন। দিদিমা সুশীলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেন।দোষীদের ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জেল হেফাজতে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিত। এরই পাশাপাশি, মৃত শিশুকন্যার পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা সরকারি সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।দোষীদের আইনজীবী জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।