পিতৃতর্পণেও বাধা কমরেডদের! হিন্দু রীতি মেনে পিতৃপক্ষের শেষে মহালয়ায় পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ করা হয়। এ রীতি বহু প্রাচীন। আর এর পরেই দেবীপক্ষের সূচনা। বঙ্গে দুর্গার আগমণ বার্তা। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনা মন ভারি বাংলার। উৎসবের মধ্যেই সবাই চাইছেন দ্রুত বিচার পান তিলোত্তমা। কিন্তু কিছু স্যোশাল মিডিয়া নির্ভর কমরেডরা পিতৃতর্পণের আচারেও বাধা দানে তৎপর। বাঙালির চিরাচরিত আবেগকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্যবহার করে প্রচারে থাকতে চাইছে বামেদের একাংশ- অভিযোগ সামাজিক মহলের।তিলোত্তমার ঘটনার তীব্র নিন্দা হয়েছে সর্বস্তরে। কিন্তু তার জন্যে দুর্গাপুজোকে বানচাল করার অর্থ একটা অন্যায়ের প্রতিবাদে আরেকটা অন্যায় করা। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষের রুটি-রুজি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও বাংলায় দুর্গোৎসব হয়। বরং সেই উৎসবকেই আন্দোলনের মঞ্চ করা হয়। সিমলা ব্যায়াম সমিতি, বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor) তাঁদের আন্দোলন মঞ্চ থেকেও পুজো বন্ধ না করার বার্তাই দিয়েছেন। কিন্তু দুর্গাপুজো ও তাঁকে ঘিরে উৎসবকে বানচাল করার ধারাবাহিক চেষ্টা করে যাচ্ছে বিরোধীদের একাংশ। অথচ যে সব টিভি চ্যানেল এবং সংবাদপত্র ‘উৎসবে’ ফিরব না বলে জোরদার প্রচার চালিয়েছে, এখন তাদের চ্যানেলে এলাকা ভিত্তিক পুজোর লড়াই! সংবাদ পত্রের পাতা জোড়া পুজোর পোশাক-জুতোর বিজ্ঞাপন। এমনকী, CPIM-এর মুখপত্র ‘গণশক্তি’-ও শনিবার প্রথম পাতায় জ্যাকেট করে জুতোর বিজ্ঞাপন ছেপেছে, যার ট্যাগ লাইন- ‘দুর্গাপুজো উদ্যাপন করুন গৌরবের সাথে’। পুজোর ভিড়কে কাজে লাগিয়ে নিজেরে বই বিক্রির জন্য পুজো প্যান্ডেলের পাশেই বইয়ের স্টল করে বামেরা। কিন্তু অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সঙ্গে কিছু বুদ্ধিজীবী (!)। যাঁরা ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি- বলে উৎসব বানচালের পাশাপাশি নিজেদের কাজের প্রচার, পুজোর কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া সবই চালিয়ে যাচ্ছেন স্যোশাল মিডিয়াকে সাক্ষী রেখেই।
মহালয়ায় সকালে পিতৃতর্পণ করতে অসংখ্য মানুষ গঙ্গা-সহ বিভিন্ন নদীর ঘাটে যান। এক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন হয়। সেখানে আবার রাস্তা দখল করে মিছিল করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। এই বিশৃঙ্খলায় তৈরি করতে চাইছে ফেসবুকীয় (Face Book) বামপন্থীরা- অভিযোগ রাজনৈতিক মহলের।
দল-মত নির্বিশেষে সারা বাংলার দাবি-আর জি করে দোষীরা শাস্তি পাক। কেউ যেন ছাড় না পায়। কিন্তু এর সঙ্গে পুজোকে জড়াতে বাংলার মানুষ রাজি নন। পুজো ঘিরে যে বিপুল কর্মসংস্থান এবং আয় হয়- তা কোনও ভাবেই হারাতে রাজি নন শ্রমজীবী মানুষ। সবার একটাই দাবি, বিচারের দাবি, অন্যায়ের প্রতিবাদ চলুক। কিন্তু পাশাপাশি দুর্গাপুজোও চলুক। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা চেষ্টা করছে বামেরা।
ভোটের লড়াইয়ে শূন্য। এবার মৃত্যু নিয়ে রাজনীতিতে নেমেছে বামেরা। তিলোত্তমার ঘটনাকে রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করে এবার পুজোকে বিভ্রান্ত করতে নেমেছে তারা। মহালয়া থেকে মিছিল করে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে ফেসবুকীয় CPIM। আর এই উৎসবের সূচনাকালে ফের উত্তাল করার চেষ্টা করছে মহানগরকে।