ডিভিসি-র ছাড়া জলে বাংলার দক্ষিণে ‘ম্যান-মেড’ বন্যা। আর উত্তরে বাঁধের ড্রেজিং না হওয়ার ফলে প্লাবন। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের (North Bengal) পরিস্থিতি সরজেমিনে খতিয়ে দেখতে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রবিবার, দুপুরে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের অধীন থাকা ফরাক্কা ব্যারাজের ঠিক মতো ড্রেজিং না হওয়ার কারণেই জল ধারণের ক্ষমতা কমে গিয়েছে। ফলে জল ছাড়তে হচ্ছে। কারণ, নেপাল থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বিহার থেকেও জল ছাড়ছে, যার জেরে দিনাজপুর, মালদার অনেক জায়গা জলমগ্ন। এদিন বিকেলেই শিলিগুড়ির (Siliguri) উত্তরকন্যায় উত্তরের জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। যে সব আধিকারিক সশরীরে যোগ দিতে পারবেন না, তাঁরা ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত থাকবেন।মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান, “দক্ষিণের ৭ টা জেলা ঘুরেছি। DVC-র ছাড়া জলে সেখানে বন্যা পরিস্থিতি। এদিকে নেপাল থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ায় উত্তরবঙ্গ বন্যা পরিস্থিতি। বিহার থেকেও জল ছাড়ছে যার জন্য দিনাজপুর, মালদার অনেক জায়গা জলমগ্ন। নেপালের জলে বাংলা বিহার দুই রাজ্য ভাসছে। এদিকে উত্তরবঙ্গ ভাসছে।“ এর পরেই কেন্দ্রের মোদি সরকারকে ঠুকে মমতা বলেন, “কারও মাথা ব্যথা নেই। নির্বাচনের সময় বড় বড় কথা বলে চলে যায়। সঙ্কোশ নদীর জন্য আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতি।“ বিকেল ৫টায় উত্তরকন্যায় বৈঠকের কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, “ফরাক্কা ব্যারাজে ঠিকমতো ড্রেজিং করে না কেন্দ্র সরকার। সেই কারণে পলি জমে গিয়েছে। ফলে ওই ব্যারাজে জল ধারণের ক্ষমতা কমেছে।“ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে কোনও রকম সাহায্য মেলেনি বলেও অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একটা টাকাও কেউ দেয়নি। কেউ খোঁজ নেয়নি।“ তাঁর কথায়, “ফরাক্কা ব্যারাজের ড্রেজ়িংয়ের জন্য কেন্দ্র কিছুই করেনি। শুধু নির্বাচনের সময় আসবে, আর বড় বড় কথা বলে চলে যাবে।“
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “নেপাল থেকে জল বিহার হয়ে বাংলায় ঢুকছে। তার ফলে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমছে।“ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে স্থানীয়দের। প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায়, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।