দুর্ঘটনায় অচৈতন্য অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আর জি কর হাসপাতালে (R G Kar Hospital)। দুর্ভাগ্যবশত তখন কর্মবিরতিতে ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা (junior doctors)। যে চিকিৎসা ও প্লাস্টার করে বাড়ি পাঠানো হয় যুবককে, তা থেকে দুদিন পরে পচা গন্ধ বেরোতে থাকে। বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান দ্রুত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পা বাদ দিতে হবে। আর সামান্য দেরি হলে প্রাণ সংশয় হত যুবকের, এমনটাও জানান তাঁরা। মঙ্গলবার সেই কাটা পায়ের ময়নাতদন্ত হয় আরেক সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে (SSKM Hospital)। যুবকের এত বড় ক্ষতির জন্য দায়ী কারা, প্রশ্ন তুলে বিচার দাবি করে রাজ্যের শাসকদল।
আর জি করের চিকিৎসকদের দীর্ঘ কর্মবিরতির ফলে প্রাণ গিয়েছে ২৯ জনের। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় এসেও আলোচনায় বসেননি দীর্ঘদিন চিকিৎসকরা। তার ফলে যেভাবে এক যুবক নিজের পা খোয়ালেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি গোটা বিষয়টি বর্ণনা করে বলেন, “সোদপুরবাসী এক যুবক সিঁথির মোড়ে স্কুটি দুর্ঘটনায় পড়েন। কার্যত অচৈতন্য অবস্থায় সেখানকার মানুষ উদ্ধার করেন। কাশিপুর থানার (Cossipore police station) পুলিশ তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যান। আর জি কর হাসপাতালে তখন কর্মবিরতি চলছিল। রোগীদের চূড়ান্ত হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। তারপর কোনও রকমে দায়সারাভাবে পায়ে একটি প্লাস্টার (plaster) করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুদিন বাদে তিনি পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করেন ও একটি পচা গন্ধ পান।”
যে পরিষেবা সরকারি হাসপাতালে একজন সাধারণ মানুষের পাওয়ার কথা, সেই পরিষেবার বদলে একটা বিরাট ধাক্কা তিনি পান বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে। বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে যুবকের যে অভিজ্ঞতা হয় তার বর্ণনা করতে গিয়ে কুণাল বলেন, “সেখানে চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে তাঁর প্লাস্টার কাটেন। তাতে দেখা যায় ব্যাকটিরিয়া (bacteria) ভর্তি। পা কালো কুচকুচে হয়ে গিয়েছে, বিষ ছড়িয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা বলেন হাঁটুর উপরে উঠে এসেছে, আর একটু উপরে উঠলে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। একমাত্র উপায় পা কেটে বাদ দিতে হবে।”
আর জি কর হাসপাতালে কীভাবে এমন চিকিৎসা হল যেখানে এক যুবকের পা বাদ গেল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানান কুণাল। তিনি বলেন, “কোন চিকিৎসকের এত বড় ভুলে সেই যুবকের পা কেটে বাদ দিতে হল। আর জি করের দায় সারায়, কোনও রকম কোনও চিকিৎসা না করে বা ভুল চিকিৎসায় প্লাস্টার করে দিলেন। দুদিনের মধ্যে সেই পায়ে বিষ ছড়িয়ে গেল। অবিলম্বে কোন চিকিৎসক এই কাজ করেছেন তাদের পরিচয় সামনে আনা হোক।” সেই সঙ্গে এই ঘটনায় পরিবারের মুখবন্ধের চাপ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা।