জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে খরচ প্রায় ৫০ লক্ষ! উৎস কী, প্রশ্ন

0
1

এলাহি খাওয়া দাওয়া। দেদার বিদ্যুতের ব্যবহার থেকে রসদের সরবরাহ। স্বাস্থ্য ভবনের (Swastha Bhavan) বাইরে দশ দিনের আন্দোলনে জুনিয়র চিকিৎসকরা (junior doctors) যা খরচ করেছেন পুলিশের হিসাবে সেই অঙ্কটা ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে। অনেকক্ষেত্রেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে অনেক খরচ বহন করা হয়েছে দাবি করা, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই এলাহি আয়োজনের উৎস কী, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে বারবার ‘স্বচ্ছতা’ (transparency) নিয়ে বাধা তৈরি করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বারবার সেই ইস্যুতে বৈঠক ভেস্তে যায়। অবস্থান বিক্ষোভ উঠে যাওয়ার পরে প্রশ্ন উঠেছে আন্দোলনের খরচ নিয়ে স্বচ্ছতা কোথায় চিকিৎসকদের। যদি স্বচ্ছতা থাকে তবে কোথা থেকে যোগান হল এই বিপুল অর্থের।

১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে অবস্থানে বসেন আর জি কর নিয়ে আন্দোলনে নামা জুনিয়র চিকিৎসকরা (junior doctors)। প্রথম রাত থেকেই সেখানে স্ট্যান্ড ফ্যান (stand fan) এসে যায়। তেল পুড়িয়ে জেনারেটর (generator) চালিয়ে সেই ফ্যান চালিয়ে স্লোগান সহ গান-বাজনায় মত্ত ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে লালবাজারে (Lalbajar) বিক্ষোভের সময় বায়ো টয়লেটের (bio toilet) সমস্যায় পড়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাই স্বাস্থ্য ভবনে প্রথম থেকেই মজুত ছিল বায়ো টয়লেট। সেই সঙ্গে খাবারের বিপুল যোগান অনেক আগেই সামনে এসেছে। ডাক্তাররা ছাড়াও সমর্থক অনেক মানুষ সেই খাবারের ভাগ পেয়েছেন অনেক সময়। উদ্বৃত্ত খাবার স্থানীয় শিশুদের মধ্যেও বিলি করেছেন ডাক্তাররা।

তবে এই আয়োজনের পিছনে খরচ হয়েছে কত? হিসাবটা মোটামুটি এরকম:
জেনারেটর (generator) ভাড়া – প্রতিদিন ৬-৭ হাজার। ১১ দিনে দুটি জেনারেটরে খরচ – প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার
জেনারেটরের তেল (generator oil) – প্রতিদিন অন্তত ১৫ ঘণ্টা ২৭ হাজার ৩০০ টাকা। ১১ দিনে খরচ – প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার
স্ট্যান্ড ফ্যান (stand fan) – প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা প্রতি ফ্যানের। ১১ দিনে খরচ – প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা (অন্তত ৫০টি ফ্যানে)
ছোট জেনারেটর – প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা। ১১ দিনে মোট খরচ – প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা (অন্তত চারটি জেনারেটর)
ছোট জেনারেটরের তেল – প্রতিদিন অন্তত ১৫ ঘণ্টায় খরচ ৩২ হাজার ৭৬০ টাকা। ১১ দিনে খরচ – প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার
বায়ো টয়লেটের (bio toilet) খরচ – প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকা। ১১ দিনে খরচ – প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার (অন্তত ২০টি টয়লেটের)
প্যান্ডেল – প্রতিদিন ৪ হাজার টাকা। ১১ দিনে খরচ – ৪৪ হাজার টাকা

তবে সবথেকে বড় খরচ ছিল খাওয়ার খরচ। প্রতিদিনের খরচ প্রায় ২ লক্ষ টাকা হিসাবে ১১ দিনে ২৫ লক্ষের কাছাকাছি খরচ, হিসাব পুলিশের। ডাক্তাররা দাবি করেছেন ক্রাউড ফান্ডিংয়ে (crowd funding) আন্দোলনের জন্য বিপুল টাকা উঠেছে। সেই সঙ্গে অনলাইনে খাবার ও পানীয় জলের সরবরাহ আন্দোলন সমর্থনকারী সাধারণ মানুষ করেছেন। সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কীভাবে এত টাকার লেনদেন হল। কোথায় সেই আমদানি আর খরচ নিয়ে স্বচ্ছতা। সাধারণ আন্দোলনের থেকে চোখে পড়ার মতো বড় আয়োজনের আর্থিক লেনদেন নিয়ে কেন স্বচ্ছতা নেই লাইভ টেলিকাস্টের দাবিদার চিকিৎকদের, রাজনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন।