আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে নৃশংস ধর্ষণ-খুনের প্রেক্ষিতে প্রবল আন্দোলনের আবহে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প রূপায়নের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্যে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের (Medical College) অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হাসপাতালের সুপার, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে উপস্থিত থাকার জন্যও স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের তরফ থেকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। নবান্ন সভাঘরে বিকেল সাড়ে চারটের ওই বৈঠকে সব হাসপাতালের সিভিল ইলেক্ট্রিক্যাল, আইটি বিভাগের কর্মীদের যোগ দিতেও বলা হয়েছে।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ আধিকারিকরাও। বৈঠকে ‘রত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। দেবেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ।
আরজি কর-কাণ্ডের পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা পরিকাঠামো উন্নয়নে একগুচ্ছ পদক্ষেপ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। বাস্তবায়নের জন্য শীঘ্রই অর্থের সংস্থান করা হবে বলেও অশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই প্রকল্পের আওতায় কর্মস্থলে মহিলাদের জন্য আলাদা শৌচালয় ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মহিলা কর্মজীবীদের নিরাপত্তার জন্য রাতে কর্মস্থলে রাখা হবে বিশেষ মহিলা স্বেচ্ছাসেবক। প্রতিটি কর্মস্থল সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা ধরে চলবে বিশেষ নজরদারি। মহিলা কর্মীদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু হচ্ছে। আপাতত ১০০ ও ১১২ নম্বরে সাহায্য চেয়ে ফোন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ঢোকা প্রত্যেকেরই শ্বাস পরীক্ষা করা হবে। অর্থাৎ কেউ মদ্যপ অবস্থায় রয়েছেন কিনা, তা দেখা হবে। মহিলা কর্মীদেরদের যৌন নির্যাতন রুখতে প্রতিটি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন অফিসে বিশাখা কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।হাসপাতাল-মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন অফিসে মহিলাদের নৈশকালীন ডিউটি বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে মহিলা কর্মীদের সঙ্গে তাঁর পরিচিত কিংবা কোনও মহিলাকেও ডিউটি দেওয়া হয় তার উপরে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর নন্দীগ্রামে! মারধর অন্তঃসত্ত্বাকে, গ্রেফতার ৫ বিজেপি কর্মী
এছাড়াও প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মহিলা হস্টেলে রাতভর চলবে বিশেষ পুলিশ পেট্রলিং। চিকিৎসক-সহ প্রতিটি কর্মীকে গলায় ঝোলাতে হবে সচিত্র পরিচয়পত্র। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিটি মেডিকল কলেজ হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা আধিকারিক নিযুক্ত করা হচ্ছে। তাঁরাই পুরো নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্বে থাকবেন।