সব ফুটেজ হস্তান্তরিত, সিব্বল তথ্য তুলে দিতেই সুপ্রিম কোর্টে চুপ CBI

0
1

আর জি করের ঘটনায় তথ্য লোপাটের অভিযোগই একমাত্র হাতিয়ার করেছে সিবিআই। তদন্তে শম্বুক গতিতে এগোনো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যেন সর্বোচ্চ আদালতে কলকাতা পুলিশের গাফিলতি প্রমাণেই বেশি ব্যস্ত থাকে। তবে তাঁরা যে আদৌ পুলিশের তুলে দেওয়া তথ্য খুলেই দেখেনি, মঙ্গলবারের শুনানিতে ফের সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। বারবার সমগ্র সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ার যে দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীরা তুলেছিলেন, তার পাল্টা প্রমাণ তুলে দিতেই স্তব্ধ হয়ে যায় সিবিআইয়ের জারিজুরি।

মঙ্গলবারের শুনানিতে সলিসিটর জেনারেলের শুনানির ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে মাত্র ২৭ মিনিটের ফুটেজ দেওয়ার নিয়ে। পাল্টা জবাবে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান সিবিআই-কে ৭-৮ ঘণ্টার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে ১৪ অগাস্ট। কোন কোন ফুটেজ ও পেনড্রাইভ তুলে দেওয়া হয়েছে তাও তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান আর জি করের চারটি ক্যামেরা সব ক্যামেরার সঙ্গেই যুক্ত। সেই চারটি ক্যামেরার ফুটেজ পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। সেই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে আর কিছু তুলে দেওয়া বাকি নেই দাবি করে প্রধানবিচারপতির হাতে সেই তালিকাও তুলে দেন।

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ফের পেন ড্রাইভে ২৭ মিনিটের ফুটেজ থাকার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুললে কপিল সিব্বল পাল্টা জবাব দেন। তিনি দাবি করেন, সিবিআই দীর্ঘ সময় পেয়েছে। তারপরেও কেন গোটা ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়নি। এরপরই চুপ করে যান সিবিআইয়ের আইনজীবী।

একমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও সিবিআইয়ের তদন্তে স্পষ্ট কোনও অগ্রগতি না দেখা গেলেও মঙ্গলবারের শুনানিতে তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। যদিও বিচারপতি পারদিওয়ালা ৯০ দিন ধরে তদন্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে সিবিআইকে সাহায্য় করতে পুরোনো নথি তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি নিজেই। নির্যাতিতার বাবার একটি চিঠি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তদন্তের কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়ে মৃতার বাবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাভাবনা উঠে এসেছে, আমরা সেই গোপণ চিঠি প্রকাশ করব না… আমরা বলতে পারি সিবিআইয়ের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ওনারা (মৃতার বাবা) পাঁচদিন দেরির জন্য সেই সময়ে অক্ষম ছিলেন, কিন্তু আপনারা এটা অবশ্যই দেখতে পারেন ওনাদের এই নিশ্চয়তা দেওয়া জন্য।”

একমাসে তদন্তে তিন গ্রেফতারির পরও প্রশ্নের মুখে সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টে তারা পরপর দুই শুনানিতে স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করলেও ৯০ দিনের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিট পেশের যে কোনও সম্ভাবনাই নেই তা মঙ্গলবার স্পষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ রাজ্যের তরফ থেকে যেভাবেই সাহায্য হোক না কেন, বারবার নানা তদন্তে প্রশ্নের মুখে পড়া সিবিআই এবার প্রধান বিচারপতির সাহায্য ছাড়াও যে এগোতে পারছে না, মঙ্গলবার তারই নজির থাকল।