সুদেষ্ণা ঘোষাল, নয়াদিল্লি
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘গেরুয়া সন্ত্রাসের’ পথে মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যালয় থেকে শুরু করে মেট্রো স্টেশন- সবেতেই গেরুয়া রং লাগাচ্ছে তারা। বদলে দিচ্ছে দেশের ইতিহাস, ঐতিহাসিক সৌধ, জায়গার নাম। এবার না কি তার ছোঁয়া লাগছে পাসপোর্টেও। এখন ভারতের সাধারণ নাগরিকদের দেওয়া হয় নীল রংয়ের পাসপোর্ট৷ এবার এই রং পরিবর্তন করে গেরুয়া রংয়ের পাসপোর্ট (Passport) দেওয়ার ভাবনায় মোদি সরকার, দাবি সূত্রের৷ভারত সরকারের তরফে মূলত তিন ধরনের পাসপোর্ট (Passport) দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে কূটনীতিকদের জন্য মেরুন রংয়ের ডিপ্ল্যোমেটিক পাসপোর্ট, শুধুমাত্র সরকারি কাজে বিদেশে যাওয়ার জন্য কোনও একজন সরকারি আধিকারিককে দেওয়া হয় সাদা পাসপোর্ট। কর্মরত আইএএস এবং আইপিএস অফিসাররা এই পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন। এর পরে তৃতীয় স্তরে আছে সাধারণ নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ নীল পাসপোর্ট৷ সব থেকে বেশি সংখ্যায় এই পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকে ভারত সরকার৷ সেই পাসপোর্টের রংয়েই এবার বদল আনার কথা ভাবছে মোদি সরকার (Modi Government)৷
হঠাৎ কেন এই পদক্ষেপ? এর আগে শিক্ষা এবং সমাজব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে গৈরিকিকরণের (Sanforized) ছাপ মিলেছে স্পষ্ট ভাবে৷ শুধু তাই নয়, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রাস্তা, রেল স্টেশন ও মুসলিম ঐতিহ্যবাহী জায়গা গুলির যেভাবে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে তা মোদি সরকারের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের পরিচায়ক বলেই দাবি করা হয়েছে বিশ্লেষকদের তরফে। এই আবহে পাসপোর্টের রং পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল।
দেশের সাধারণ নাগরিকদের দেওয়া পাসপোর্টের রং বদলের নিরিখে মোদি সরকারের ভাবনা প্রাথমিকভাবে ধাক্কা খেতে পারে অন্যত্র- দাবি নয়াদিল্লিতে সরকারি সূত্রে৷ বিদেশমন্ত্রক সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই যারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন তাঁদের হাতে কালো রংয়ের পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য কয়েক কোটি পাসপোর্ট আগেই ছাপা হয়ে আছে৷ এই বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট বাতিল করার অর্থ মোটা অঙ্কের টাকা জলাঞ্জলি দেওয়া৷ এই পথে না হেঁটে যাবতীয় নীল পাসপোর্ট ব্যবহার শেষ হওয়ার পরেই নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করার সম্ভাবনা মাথায় নিয়েই মোদি সরকার এগোচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।