নবান্ন অভিযান নিয়ে সতর্ক প্রশাসন: পুলিশ বাহিনী মোতায়েনে জারি নির্দেশিকা

0
3

২৭ অগাস্ট নবান্ন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ব্যানারে অভিযানের দিন অশান্তি রুখতে সারা শহর জুড়ে নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নবান্ন (Nabanna) অভিযান ঘিরে যাতে আইনশৃঙ্খলা কোনওভাবে বিপন্ন না হয়, সেদিক নজরে রেখে বিরাট পুলিশের বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। জেলা থেকেো পদস্থ পুলিশ কর্তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। শনিবার, পুলিশের তরফে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৬ অগাস্ট বিকেল ৪টের মধ্যে কলকাতা পুলিশ (Police) কমিশনারের কাছে রিপোর্ট করবেন। হাওড়া শরৎ সদনে তাঁদের সকলকে নবান্ন অভিযানের দিনের ডিউটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই তাঁদের কাজ করতে হবে। আর এই অভিযান শেষ হলেই তাঁরা নিজেদের পুরনো ডিউটিতে ফিরে যাবেন।

নবান্ন অভিযানের ডিউটির জন্য SP, DSP থেকে শুরু করে অ্যাডিশনাল ডিসি এবং ইন্সপেক্টর র্যা ঙ্কের অফিসারদের ডাকা হয়েছে। শিলিগুড়ি, ব্যারাকপুর, তমলুক, ঝাড়গ্রাম, বারুইপুর, বারাসত, রানাঘাট, বসিরহাট-সহ একাধিক জেলা থেকে পুলিশ অফিসারদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই নির্দেশিকায় এও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে যে সমস্ত অফিসাররা আসবেন তাঁরা যেন নিজেদের সঙ্গে ঢাল, লাঠি, হেলমেট, বডি প্রটেক্টিভ গিয়ার, রেনকোট, ছাতা ইত্যাদি রাখেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, নবান্ন অভিযান নিয়ে কতটা তৎপর পুলিশ প্রশাসন।

সেদিন ২১ জন আইজি এবং ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার পরিস্থিতি সামলাকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। ১৩ জন এসপি বা ডিসি পদমর্যাদার অফিসার,১৫ জন এডিসিপি বা এসিপি পদমর্যাদার অফিসা ও ২২ জন এসি বা ডেপুটি এসপি পদমর্যাদার অফিসার থাকবেন। ২৬ জন ইনস্পেক্টর সহ ২ হাজারের বেশি পুলিশ (Police)। লক্ষ্য একটাই, জমায়েত ঘিরে যেন কোনওভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়।

ছাত্র সমাজের নামে এই আন্দোলনের পিছনে যে বিজেপি রয়েছে তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে পুলিশের কাছেও। বামেদের একাংশও যোগ দিতে পারে গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিতে। বামেদের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করে এবিভিপি ও আরএসএসের ছদ্মনামের প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হচ্ছে এই কর্মসূচির। সূত্রের খবর, এই নবান্ন অভিযানের রাশ থাকছে বিজেপির ছাত্র ও যুব সংগঠনের হাতে। ফলে শেষমেশ এই কর্মসূচি থেকে এড়িয়ে থাকার দাবি করছে বাম-সহ অন্যা ন্যষ ছাত্র সংগঠনগুলি। ২৭ তারিখ দুপুর ১টায় কলেজ স্কোয়ার ও সাঁতরাগাছিতে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবং হাওড়া-হুগলি জেলার যুব মোর্চা ও এবিভিপির কর্মীরা সাঁতরাগাছিতে জমায়েত করবেন। অন্যহদিকে, কলেজ স্কোয়ারের জমায়েতে দুই কলকাতা ও শহরতলি থেকে গেরুয়া ছাত্র-যুব কর্মীরা আসবেন। আর তাই নবান্ন অভিযানের দিন কার্যত দুর্গ করে ফেলা হচ্ছে নবান্ন ও সংলগ্ন এলাকা। পুলিশ সূত্রে তেমন খবরই পাওয়া যাচ্ছে।

নবান্ন শুধু মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নয়, রাজ্যের সচিবালয়ও। স্বভাবতই এমনি দিনেও নিরাপত্তার বেষ্টনী
এখানে বেশ সুদৃঢ় থাকে। আর জি কর কাণ্ডের পর থেকে সেই সুরক্ষা আরও বাড়ানো হয়েছে।

নবান্ন অভিযান ঘিরে যাতে নবান্ন ও আশেপাশের এলাকায় অর্থাৎ মন্দিরতলা, চ্যাটার্জিহাট, শিবপুর, কাজিপাড়া, ক্যারি রোড, শালিমার, বি গার্ডেন এলাকায় যাতে কোনও ভাবেই আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন না হয়, সেদিক নজরে রেখেই এখন থেকেই ধাপে ধাপে বড় সংখ্যার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। নবান্ন অভিযানের দরুন ২৭ অগাস্ট কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং ফরশোর রোডের যে যান চলাচল ব্যাহত হবে অনেকাংশেই সেটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে প্রশাসনকে। ফলে সেদিন সকাল থেকেই দক্ষিণ হাওড়া কার্যত বিচ্ছিন হয়ে যেতে পারে হাওড়ার মূল শহর ও কলকাতার থেকে। যদিও এর আগে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ২-৩ দফার বিজেপির নবান্ন অভিযানের গতিপ্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় আছে। তাই সেই সম অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েও নবান্নের নিরাপত্তা বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে।