এক সপ্তাহের বেশি সময় হলো তদন্তভার গ্রহণ করেছে CBI ,কিন্তু এখনও পর্যন্ত আরজি কর (RG Kar Medical College and Hospital)কাণ্ডে কাউকে অ্যারেস্ট করা গেল না কেন? চিকিৎসক থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ যখন এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তখন বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court) তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির আইনজীবীর তরফে বলা হয়েছে অপরাধস্থল বদলে যাওয়ায় তদন্তে সমস্যা হচ্ছে। এদিন শুনানি চলাকালীন সিবিআই-এর (CBI)তরফে বলা হয় ঘটনা ঘটার পাঁচ দিন পর তারা দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন ততক্ষণে অপরাধ যেখানে হয়েছে সেই স্থানে একাধিক পরিবর্তন হয়েছে। সেই কারণেই সঠিক প্রমাণ খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাল্টা রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল (Kapil Sibbal) জানান কোথায় কোনও পরিবর্তন হয়নি সবকিছুর ভিডিওগ্রাফি করা আছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর কাণ্ডের দ্বিতীয় শুনানিতে দায়িত্বে থাকা পুলিশ প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর কীভাবে UD কেস অর্থাৎ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা (JB Pardiwala)। নিজের ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে পুলিশের এমন আচরণ দেখেননি বলেও দাবি করেন তিনি। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে টালা থানার (Tala Police Station) যে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার গোটা বিষয়টি নথিবদ্ধ করেছিলেন তাঁকে পরবর্তী শুনানিতে হাজির থাকা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।। এদিন রাজ্যের দেওয়া টাইমলাইন নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম আদালত। এদিন দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থার কথা বলতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমি নিজে একবার সরকারি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রাত কাটিয়েছিলাম, যখন এক আত্মীয় অসুস্থ ছিলেন”। পাশাপাশি ডাক্তারদের কেন টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে সেই নিয়ম প্রশ্ন ওঠে। এদিন সলিসিটর জেনারেল জানান, চিকিৎসকের দেহ সৎকারের পরে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এফআইআর করা হয়েছে। যেখানে দেহ উদ্ধার হল সকালে এখানে রাতে অপরাধস্থল সিল করা হলো। তাঁর প্রশ্ন এতক্ষণ ধরে পুলিশ কী করছিল?’ রাজ্য আদালতে জানায়, কী কী হয়েছে, প্রতি মিনিটের টাইমলাইন তাদের কাছে রয়েছে। বিচারপতি পারদিওয়ালা জানতে চান, কখন ময়নাতদন্ত হল? রাজ্য জানায়, সন্ধ্যা ৬টা ১০ থেকে ৭টা ১০-এর মধ্যে। বিচারপতি পারদিওয়ালা এরপর প্রশ্ন করেন অস্বাভাবিক মৃত্যু কখন দায়ের করা হয়? রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল, দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছিল। বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, “এটা কি অস্বাভাবিক মৃত্যু? যদি হয়, তবে ময়নাতদন্তের কী প্রয়োজন ছিল? এখানে দেখতে পাচ্ছি রাত সাড়ে ১১টায় জেনারেল ডায়েরি হয়। তার ১৫ মিনিটের মাথায় এফআইআর হল? আদালতের কাছে সঠিক ভাবে বক্তব্য রাখুন।” এরপরই ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখতে চায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট এর ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ আদালত। দুপুর দুটোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি।