লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে স্বৈরাচারী পদক্ষেপ থেকে অবশেষে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হল মোদি সরকার। বিরোধীদের ক্রমাগত চাপের মুখে ইউপিএসসি (UPSC)-তে ল্যাটেরাল এন্ট্রি (Lateral Entry) প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দিল কেন্দ্রের পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং মিনিস্ট্রি (Ministry of Personnel and Training)। মঙ্গলবারই ইউপিএসসি-র নিয়োগের নির্দেশিকার উপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিতে বাধ্য হল কেন্দ্রের সরকার।
কেন্দ্রের সরকার গঠনে শরিক দলের উপর নির্ভর করা মোদি সরকার এবারেও একাধিক স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে মনে করেই ইউপিএসসি-তে দেশের শীর্ষপদে আধিকারিক নিয়োগের জন্য ল্যাটেরাল এন্ট্রি বা পশ্চাদ্বার খুলেছিল। ৪৫ পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। দেশের ২৪টি মন্ত্রকের জয়েন্ট সেক্রেটারি, ডেপুটি সেক্রেটারি ও ডিরেক্টরের মতো শীর্ষপদে নিয়োগের জন্য প্রতিভাবান ও অনুপ্রাণিত ভারতীয় নাগরিকদের আবেদনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরেই প্রতিবাদ শুরু করে I.N.D.I.A. জোটের সদস্যরা। তাঁদের তরফ থেকে দাবি করা হয় এভাবে শীর্ষপদে নিয়োগ হলে তাতে খোলাখুলিভাবে দেশের পিছিয়ে পড়া শ্রেণিগুলিকে বঞ্চিত করা হবে। রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, “ল্যাটেরাল এন্ট্রি দলিত, ওবিসি ও আদিবাসীদের আঘাত। বিজেপির রামরাজ্যের বিকৃত সংস্কার সংবিধানের অধিকার হরণ করছে এবং বহুজনের সংরক্ষণকে ছিনিয়ে নিচ্ছে।” যদিও মঙ্গলবার প্রকাশিত নির্দেশিকায় কোনও তারিখ না থাকায় সমালোচনায় সরব কংগ্রেস।
বিরোধীদের প্রতিরোধের মুখে অবশেষে ইউপিএসসি-কে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের নির্দেশ দিল কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশিকায় দাবি করা হয়, আগে অনেক ক্ষেত্রে ২০০৫ সালে ল্যাটেরাল এন্ট্রি প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর থেকে নিয়োগ হয়েছে, নীতি নির্ধারণ হয়েছে। যদিও ২০১৪ সালের এই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ অ্যাড-হক (Ad-hoc) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে। এবার যে সেই পথেও যায়নি ইউপিএসসি কার্যত তা মেনে নেয় কেন্দ্র। সেই সঙ্গে দাবি করা হয় এই পদগুলি ‘বিশেষ’ ও ‘মনোনিত’। সেই কারণে এক্ষেত্রে ল্যাটেরাল এন্ট্রির সুবিধা সম্ভব বলেও দাবি করা হয়। যদিও চাপের মুখে সংবিধানের সামাজিক ন্যায়বিচারের বার্তা দিতে বাধ্য হন নরেন্দ্র মোদি। সেই যুক্তিতে ইউপিএসসি-কে বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেওয়া হয়।