কোথাও চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরাই ধর্ষিতা ডাক্তারের হাতে। কোথাও নাবালিকার অপহরণ ও ধর্ষণ করে খুন করার পরে পরিবার চাইছে দ্রুত তদন্ত, যাতে পরিবারের আর কেউ সেই খুন ধর্ষণের অভিযোগ করার জন্য খুন না হয়ে যান। দুই হাড়হিম করা ঘটনাই বিজেপি শাসিত রাজ্য ওড়িশা ও বিহারের। নারী নির্যাতন নিয়ে এই রাজ্যে রাজনীতির মধ্যে দিয়ে হাওয়া গরম ও রাজ্যের নাম গোটা দেশে বদনাম করার চেষ্টায় নামা বিজেপি নেতারা নিজেদের রাজ্যেই নারীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, তা একাধিক ঘটনায় সাম্প্রতিক কালেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
ওড়িশার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সুপ্রাচীন এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে কটক পুলিশ। ইকোকার্ডিওগ্রাম করতে আসা দুই রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দিলবাগ সিং ঠাকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুই মহিলাকে নিয়ম ভেঙে একাই ইকো করতে নিয়ে যান তিনি। রবিবার ফাঁকা হাসপাতালের সুযোগ নেন তিনি। সেই সঙ্গে রোগীর আত্মীয় যে ওই মেডিক্যাল কলেজেরই ডাক্তার, তাঁকেও ইকোর সময় ঢুকতে দেননি তিনি। পরে রোগীর আত্মীয়রা তাকে বেধড়ক মারধর করে। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা ধর্ষক ডাক্তারকে।
অন্যদিকে এক দলিত নাবালিকাকে অপহরণ করে খুন করা অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল বিহারের মজফফরপুরের পারু থানার পুলিশ। নাবালিকাকে জোর করে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় গ্রামেরই ওই যুবক। কিন্তু নাবালিকার পরিবার বিয়েতে রাজি হয়নি। এরপর সোমবার সঙ্গীদের নিয়ে এসে তাকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে অভিযুক্ত যুবক সঞ্জয় রাই। পরে গ্রামের কাছের একটি পুকুরে নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুকুরের পাশেই উদ্ধার হয় রক্তমাখা কাস্তে। অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। নাবালিকার পরিবারের এক সদস্য চলতি সপ্তাহেই খুন হন। এরপরই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের উপর চাপ দেয় ওই দলিত পরিবার।
পারু থানার ওই দলিত পরিবারের উপর নাবালিকা মেয়েকে ওই যাদব পরিবারের যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছিল সঞ্জয় রাই। কিন্তু পরিবার রাজি না হওয়ায় নাবালিকাকে ধর্ষণের হুমকিও দেয়। তবে মৃত নাবালিকার ধর্ষণ হয়েছিল কিনা তা এখনও পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি। পুকুরে দেহ ফেলে দেওয়ায় প্রমাণ লোপাটেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঘটনায় তিনদিন ধরে অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় ও তার নামে খুনের মামলা রুজু হওয়ায় দলিত পরিবারে আতঙ্ক ছড়ায়। শেষমেশ বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তার পাঁচ সঙ্গী এখনও ফেরার। যা চিন্তা আরও বাড়িয়েছে দলিত পরিবারের।