টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার বার্তা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির

0
1

টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ৩০০০ জনকে তাদের স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করল। সোমবার, ২০২৪-এর সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হল বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে । প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন শঙ্কর মহাদেবন,অভিনেত্রী শাবানা আজমি, ক্রীড়াবিদ লিয়েন্ডার পেজ, চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরি,আচার্য গৌতম রায়চৌধুরী, সহ-আচার্য মানসী রায়চৌধুরী সহ বিশিষ্টরা।এদিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২২ জন গবেষক পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।এছারাও ৬০ জন পড়ুয়াকে স্বর্ণ পদক সহ প্রায় ৩০০০ জনেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে শংসা পত্র প্রদান করা হয়।

আচার্য গৌতম রায়চৌধুরী বলেন, টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সামগ্রিক শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাস করে এবং শিষ্টাচার, শৃঙ্খলা এবং শিক্ষার্থীদের তাদের সম্প্রদায়, সমাজ এবং জাতির জন্য দায়িত্ব নিতে চ্যালেঞ্জ করার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি সর্বদাই উদ্ভাবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে উজ্জ্বল মন ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য একত্রিত হয়। আমাদের প্রতিষ্ঠান সময়ের পরীক্ষায় দাঁড়িয়েছে, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার পরিবর্তিত ল্যান্ডস্কেপের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে এবং বিকশিত হচ্ছে।

এদিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কধারী ও স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা তাদের অধ্যাপকদের সামনে পুরস্কার গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের হাতে ডিগ্রির সনদ তুলে দেন শিক্ষকরা।সহ-আচার্য মানসী রায়চৌধুরী বলেন,শিক্ষার্থীদের মনে একটি বিশেষ আবেগ তৈরি করার জন্য এই অনন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল যা সারাজীবন তাদের সঙ্গে থাকবে। টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি আনুষ্ঠানিক উপায়ে একজনের পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাকে একত্রিত করার উপায় দেখায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, এই ধরনের মহান প্রচেষ্টার নেপথ্যে রয়েছে শিক্ষক, অধ্যাপকরা। যারা অক্লান্তভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্য তাদের ভরসা জুগিয়েছেন। সকল ডিগ্রিধারীদের অভিনন্দন!উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হওয়ার বার্তা দেন।অনুষ্ঠানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনা, বায়ুসেনার কর্তারা।
এদিনের অনুষ্ঠানে গবেষক-পড়ুয়াদের পাশাপাশি আইআইটি খড়্গপুর আইআইটি-র অধ্যাপক ডঃ পার্থপ্রতীম চক্রবর্তীকে সাম্মানিক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।রাজ্যের শিক্ষা প্রসারে অবদানের জন্য বিশেষ আচার্য্য পদক তুলে দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. আবু তাহেরকে। অন্যদিকে ভারতীয় সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য প্রখ্যাত কবি গুলজারকে,সঙ্গীতে শঙ্কর মহাদেবনকে এবং ভারতীয় শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য শাবানা আজমিকে সাম্মানিক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরী বলেন, এমন একটি বিশ্ব তৈরি করতে হবে যা আপনাদের প্রত্যেকের মধ্যে অসীম সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত করবে। অভিনেত্রী শাবানা আজমী বলেন, আপনি যখন একটি সফল কেরিয়ারের দিকে আপনার যাত্রা শুরু করছেন, মনে রাখবেন যে পথটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কিন্তু আপনার সংকল্প এবং আবেগ পথকে আলোকিত করবে। প্রতিটি সূর্যোদয় যেমন নতুন সুযোগ নিয়ে আসে, তেমনি আপনার প্রচেষ্টা পথকে আলোকিত করে। ক্রীড়াবিদ লিয়েন্ডার পেজ বলেন, আপনার ভবিষ্যত আপনার সম্ভাবনার মতো উজ্জ্বল হোক।
প্রসঙ্গত,টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক মানের পেশাদার শিক্ষার একটি উন্নত প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যেখানে জাতীয়তা, ভাষা, সাংস্কৃতিক বহুত্ব এবং ধর্মের বাধা অতিক্রম করে জ্ঞান এবং শ্রেষ্ঠত্বের অন্বেষণ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হবে। পশ্চিমবঙ্গের টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির মূল ভিত্তি হল ছাত্রছাত্রীদের সামগ্রিক বিকাশ যাতে তারা শুধুমাত্র পেশাদার ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের সব ক্ষেত্রেই সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়।