নয় নয় করে পঞ্চাশটা বছর কাটিয়েছেন এক ছাদের তলায়।আর এই চলার পথে সঙ্গী ছিল ঝগড়াঝাটি, বাগবিতণ্ডা! তবু ছেড়ে যাননি পরস্পরকে। এমনই ‘গোল্ডেন জুবলি’ যুগলকে পুরস্কৃত করবে কলকাতা পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড।এই পুরস্কারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বর্ণ সঙ্গী সম্মান’। এই পুরস্কারের প্রধান উদ্যোক্তা মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। আগামী ১৫ আগস্ট বিকেলে গুরুদাস রোডে বসবে এই অভিনব পুরস্কারের আসর। স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, আমরাই খুঁজে বের করছি এমন যুগলদের।
বর্তমানে ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ অহরহ ঘটছে। স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, সেখানে যারা টানা অর্ধ শতাব্দী ধরে সংসার করছেন তাদের পুরস্কার প্রাপ্য বইকি। এদের দেখে নতুন প্রজন্ম যদি একটু ‘শিক্ষা’ নেয়! ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির প্রাক্তন ডিরেক্টর, ডা. প্রদীপকুমার সাহা অহরহ ডিভোর্সের জন্য দায়ী করেছেন বাজার অর্থনীতিকে। তাঁর বক্তব্য, মানুষ এখন অর্থের পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে। কারও হাতে সময় নেই। গ্যারেজে দামি গাড়ি চাই, দামি ফ্ল্যাট চাই, কয়েক লক্ষ টাকার ইন্টেরিয়র ডেকরেশন চাই। ছুটিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া চাই। আর এই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে হাতে সময় নেই নতুন প্রজন্মর। নতুন যুগলরা এখন আর একে অপরের সঙ্গে গল্প করে না। ফলে বুঝতে পারছে না একে অপরকে। অল্পেতেই ভাঙছে সম্পর্ক।
কিন্তু কেন এই অধৈর্য? নতুন প্রজন্মের এই অধৈর্যের জন্য তাদের অভিভাবকদের দায়ী করেছেন চিকিৎসক। তার কথায়, সন্তানদের বড় করার মধ্যে অভিভাবকদের দায়িত্ববোধের অভাব থেকে যাচ্ছে। এখন অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের সময় দেন না। গল্প করেন না। ছেলেমেয়েরাও বুঝতে পারে না সময়ের মূল্য। তারাও ভাবছে দামি উপহার সবকিছুর সমাধান। এই পুরস্কারের মানপত্র লেখা থাকছে, অবিচ্ছেদ্য জীবনসঙ্গী রূপে পারস্পরিক বিশ্বাস শ্রদ্ধা ভালোবাসার ভিত্তিতে সুগঠিত আপনাদের সমধুর সম্পর্ক বর্তমান সমাজ জীবনে উজ্জ্বল আদর্শ স্বরূপ। যুগলদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ফলের ঝুড়ি, মিষ্টি, একরাশ উপহার।