১০০দিনের কাজে জব কার্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জব কার্ড হোল্ডাররাই ১০০দিনের কাজ করার সুযোগ পান। তবে এই জব কার্ড নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিতর্ক হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ভুয়ো জব কার্ডের অভিযোগ এসেছে। কিন্তু কোনও রাজ্য, বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্য ১০০দিনের কাজের টাকা থেকে বঞ্চিত হয়নি। একমাত্র ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণে ১০০দিনের কাজ ও তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত বাংলার মানুষ।
কেন্দ্রের তরফে ভুয়ো জব কার্ড বাতিলের একটি তালিকা এবার সামনে এসেছে। যার শীর্ষ সারিতে রয়েছে , উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, গুজরাত, বিহারের মতো বিজেপিশাসিত বা বিজেপির সহযোগী রাজ্যগুলি। কিন্তু ভুয়ো জবকার্ডের কারণ দেখিয়ে শুধু পশ্চিমবঙ্গের টাকা আটকে রাখা হয়েছে।
এর যৌক্তিকতা কী? শুধু কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা? ভোটে হেরে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা? ফের একবার এই প্রশ্নগুলি তুললো বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। জব কার্ড বাতিলের ধুয়ো দিয়ে বাংলার প্রাপ্য যদি আটকে রাখা হয়, তাহলে সেই সংখ্যাটি ঢের বেশি উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশের! তাদের কী হবে? কেন তাদের তহবিল বন্ধ করা হল না? রাজ্যওয়াড়ি ভুয়ো জবকার্ড বাতিলের তালিকা দেখিয়ে এমনই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
কুণাল ঘোষ এদিন এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরেন ২০১৯-২০ থেকে ২০২৪-এর ৩০ জুলাই পর্যন্ত ভুয়ো জবকার্ড বাতিলের একটি তালিকা। সেই তালিকায় দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের থেকে ভুয়ো জবকার্ড বাতিলে অনেক এগিয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ। কিন্তু প্রাপ্ত থেকে বঞ্চিত শুধু বাংলা।
বাংলার বঞ্চনা আসলে কেন্দ্রের চক্রান্ত। এ প্রসঙ্গে এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিষেক বন্দোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আবাস ও ১০০দিনের টাকা সহ বিভিন্ন খাতে বাংলার পাওয়া নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির নেতারা সেটা করছেন না। শুধু কথার জগলারি করছেন।”
এরপর তথ্য তুলে ধরে কুণালের সংযোজন, “সংসদ থেকে সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে কেন্দ্র বাংলাকে ১০০দিনের টাকা দেয়নি কেন্দ্র। এদিন আবার একটি তথ্য উঠে এসেছে। আমাদের তরফে বার বার বলা হয়েছে, যদি কোথাও কোনও অনিয়ম থাকে সেটা তদন্ত সাপেক্ষ, বাকি টাকাটা দেওয়া হোক। কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যাচ্ছে ২০১৯-২০ আর্থিক বছর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুলাই, এই সময়কালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জব কার্ড বাতিল হয়েছে উত্তর প্রদেশে। সংখ্যাটি হল ৯১ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৭৬! এরপর রয়েছে ওড়িশা, ৪২ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৪৫! মধ্যপ্রদেশ ৩৭ লক্ষ ৭৪ হাজার ১৬০। অন্ধ্রে ৩৫ লক্ষ ৫৪ হাজার ১৯৩। অথচ বিরাট রাজ্য হয়েও পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যাটি ২৪ লক্ষ ৫ হাজার ৮৬৯।”
Job card deleted.
2019-20 to 30.7.24
Look at the list and ask Delhi, why the fund for WB is being stopped? What about UP, Orissa, MP, AP and others?
Why are their funds have not been stopped?
Delhi has to clear WB’s due in every schemes immediately. pic.twitter.com/WU3BcCr3ht— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 6, 2024
কুণালের যুক্তি, “জব কার্ড বাতিল মানেই অনিয়ম নয়। মৃত্যু সহ বিভিন্ন কারণে তা বাতিল হতে পারে। কিন্তু বাংলাকে ইঙ্গিত করে যদি কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে এ রাজ্যে গত ৫ বছরে বাতিলের সংখ্যার চেয়ে যে রাজ্যগুলিতে তা বেশি, তারা তাহলে কীকরে টাকা পাচ্ছে? আমাদের স্পষ্ট দাবি, অন্যায়ভাবে, মিথ্যা অভিযোগে , রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভাবে বাংলার ন্যায্য পাওনা আটকে রাখা হয়েছে। এবং বিজেপি শাসিত বা সহযোগী রাজ্যগুলিকে ঢালাও টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র। এটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ যে বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন উত্তর প্রদেশে সবচেয়ে বেশি জব কার্ড ডিলিট হয়েও টাকা পাচ্ছে। বাংলাকে অবিলম্বে প্রাপ্য টাকা মেটানো উচিত।”
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের শ্রমিক বঞ্চনার প্রতিবাদে আইএনটিটিইউসির সভা