নিট (NEET) পরীক্ষায় বেনিয়মের অভিযোগে শীর্ষ আদালতের কড়া ধমকের মুখে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি(NTA)। নিটে ব্যাপক বেনিয়ম নিয়ে তিরস্কারের পাশাপাশি এনটিএ-কে পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভুলভ্রান্তি দ্রুত শুধরে নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের (supreme Court of India)। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয় এক বছরের মধ্যে পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভুল শুধরে নেবে এনটিএ। পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদি সরকারের উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের সাফ বার্তা ডিগবাজি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
এনটিএ-কে ধমক দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পরীক্ষা নিয়ে বারবার অবস্থান বদল করা মেডিক্যাল পড়ুয়াদের জন্য একেবারেই সঠিক নয়। পাশাপাশি এনটিএ(NTA)-র পরিকাঠামগত ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা রয়েছে, তা রায়ে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের তরফে ইসরোর প্রাক্তন প্রধান ডঃ কে রাধাকৃষ্ণনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কমিটিকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতিতে কী খামতি রয়েছে এবং তা পূরণ করতে কী পরিবর্তন করা উচিত, তা নিয়েই সুপারিশ দেবে এই কমিটি। এছাড়াও শীর্ষ আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের মঙ্গলের ক্ষেত্রে এই ধরনের ভুল-ভ্রান্তি মানা যায় না।
তবে এদিন কমিটিকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা প্রোটোকলও বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছে,
এনটিএ-কে নিজের বারবার অবস্থান বদলানোর অভ্যাস বদলাতে হবে।
যে খামতিগুলি উঠে এসেছে, সেগুলি কেন্দ্রীয় সরকারকে ঠিক করতে হবে এবং শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
পরীক্ষার পদ্ধতিগত খামতি কি রয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখবে উচ্চ কমিটি।
পরীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য আরও বেশি করে প্রযুক্তির ব্যবহার।
নকল পরীক্ষার্থীদের আটকাতে বিভিন্ন স্তরে ডিজিটাল ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা।
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি, সংরক্ষণ ও বন্টন পদ্ধতি সহজ করতে হবে।
প্রয়োজনে অন্য দেশের সঙ্গে কথা বলতে হবে, সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়ারাও যাতে সমান সুযোগ পায় সেটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে নিট মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। চার্জশিটে মোট ১৩ জনের নাম রয়েছে। সেই তালিকায়, দুর্নীতির মাথ থেকে শুরু করে নিট পরীক্ষার্থী, অভিভাবক-সকলেরই নাম রয়েছে। কিন্তু তদন্ত যেহেতু এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাই সিবিআই ফের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেবে বলেই জানিয়েছে। নিট নিয়ে বিতর্ক সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত এই দুর্নীতি মামলায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্য়ে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বিহার পুলিশ। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, চার্জশিটে নীতীশ কুমার ও অমিত আনন্দ নামক দুই যুবককে কিংপিন বলেই উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থা। রয়েছে চার পরীক্ষার্থীর নামও। এছাড়া বিহারের দানাপুর টাউন কাউন্সিলের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সিকন্দর যাদবেন্দ্রের নামও রয়েছে সিবিআই চার্জশিটে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসভঙ্গের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।