দ্বিতীয়বার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল! পাঁচ বছর আগে এমন বিপর্যয় ঘটেছিল। তবে এটা একেবারেই স্পষ্ট, যে এই এলাকায় একটি পরিবেশগত সমস্যা রয়েছে। অতএব, এর যথাযথ তদন্ত করা উচিত এবং উচ্চ প্রযুক্তির সমাধান দ্রুত খুঁজে বের করা উচিত। বুধবার সংসদে এমনটাই জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বুধবারই বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েনাড়ে (Waynad) ক্ষতিগ্ৰস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল রাহুলের (Rahul Gandhi)। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেই পরিকল্পনা বানচাল হয়েছে। তবে দ্রুত কেরলের ওয়েনাড়ে গিয়ে পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখবেন কংগ্রেস সাংসদ। তবে বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah)অভিযোগ, কেরলে অত্যধিক বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। তার প্রভাবে যে ধস নামতে পারে, আগেই তা বোঝা গিয়েছিল। এমনকি, কেন্দ্র থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ন’টি দলকেও আগেভাগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেরলে। কিন্তু এত কিছু করা সত্ত্বেও সময়ে ব্যবস্থা নেয়নি কেরল সরকার।
তবে এদিন ওয়েনাড়ে যেতে না পারলেও সংসদে উপস্থিত হয়ে ওয়েনাড়ের দুর্ঘটনাকে ‘ট্র্যাজেডি’ উল্লেখ করে রাহুল বলেন, সামরিক বাহিনী ও উদ্ধারকারীরা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। সোনিয়া তনয় মনে করিয়ে দেন, আমি মনে করি ওয়েনাড়বাসীর পাশে দাঁড়িয়ে সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। পাশাপাশি রাজনীতি দূরে সরিয়ে ওয়েনাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকতে মোদি সরকারকেও অনুরোধ জানিয়েছেন রাহুল। তবে সময় যত গড়াচ্ছে খারাপ আবহাওয়ার কারণে কেরলের ওয়েনাড়ে ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ইতিমধ্যে সেই সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে। এখনও জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। কত জন আটকে রয়েছেন, কত জন নিখোঁজ তা স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ি এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৫১ জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তবে সূত্রের খবর এখনও ২০০ জনের বেশি মানুষ ঘরছাড়া। তাঁদের খোজ চলছে।
তবে এমন পরিস্থিতিতে বুধবার কেরলে আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। ফলে উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে দুর্যোগ এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতার কারণে বুধবার কেরলের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বৃহস্পতিবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে বলে সরকারি সূত্রে খবর। রাজ্যে দু’দিনের শোক পালনের ডাক দিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। অন্যদিকে, ধসের কারণে রাস্তাঘাটের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। বেশিরভাগ জায়গায় রাস্তা ধসে গিয়েছে। ফলে পুলিশ-প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে। উদ্ধারকাজে ভারতীয় সেনার হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।