রাজ্যের মন্ত্রীদের তরফে কেন্দ্রের জনবিরোধী তিন ফৌজদারি আইনে পরিবর্তন আনার জন্য বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হয়। ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস), ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (বিএসএ) আইন কেন্দ্র সরকার পাসের তিনমাসের মধ্যে তার রিভিউ রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। তার আগেই কেন্দ্রের কাছে এই আইন সংশোধন নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে প্রস্তাব পেশের জন্য বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ হল বুধবার।
গত সপ্তাহে বিধানসভায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব পেশের কথা থাকলেও উত্তর বাংলার বন্যা ও নদী সমস্যার কারণে তা পিছিয়ে যায়। বুধবার বিধানসভায় আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ও বিধায়ক অশোক কুমার দেব এই প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবে স্পষ্ট করে জানানো হয়, সংসদে বিরোধী শূন্য অবস্থায় তড়িঘড়ি এই বিল পাস হয়েছে। ফলে কোনওভাবে নির্বাচিত সাংসদদের মতামত এতে প্রতিফলিত হতে পারে না। দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ লগ্নে ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর লোকসভায় ১৪৭ সাংসদকে সাসপেন্ড করে এই বিল পাস হয়। পরের দিনই রাজ্যসভায় আলোচনা ছাড়াই পাস হয়ে যায় বিল। তড়িঘড়ি ২৫ ডিসেম্বর বিলে সই করেন রাষ্ট্রপতি।
সেই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, পূর্ববর্তী ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যেভাবে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে আইন ও শাস্তির বিধান ছিল, এই তিন আইনে অনেক বেশি কঠোর ও জনবিরোধী আইনের প্রতিফলন হয়েছে। সেই সঙ্গে সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বিশেষ আইন রয়েছে আগে থেকেই। ন্যায় সংহিতায় আলাদাভাবে এই সব ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের ফলে সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত শাস্তি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের বোঝা চাপানো হবে। এই আইনে পুলিশের হাতে এতটা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা ব্রিটিশ শাসনের সময়েও দেওয়া হয়নি।
প্রস্তাবে অভিযোগ করা হয় কোনও রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই আইন প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রে বিজেপির নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা হলেও তাঁদের পক্ষে আইন সংশোধন সম্ভব। সেক্ষেত্রে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই তিন আইনের সংশোধন চেয়ে সব সাংসদরা সরব হবেন বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।