বাজেটের হালুয়া থেকে মহাভারতের চক্রব্যূহ, সংসদে অপ্রতিরোধ্য রাহুল

0
2

এই সংসদেই কৃষকদের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের বিল পাস হবে, লোকসভায় একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারানো বিজেপিকে খোলা চ্যালেঞ্জ বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর। চারশো পারের আওয়াজ তোলা বিজেপি লোকসভায় ২৪০ আসনে নেমে যাওয়ার পরেও দেশের কৃষক, মধ্যবিত্ত বা যুবকদের কথা না ভেবে যে বাজেট পেশ করেছে, তার জবাবি ভাষণে সোমবার তীব্র প্রতিবাদ জানান বিরোধী দলনেতা। সেই সঙ্গে লোকসভায় সাংবাদিকদের গতিরোধের প্রতিবাদও সংসদে দাঁড়িয়ে করেন বিরোধী দলনেতা।

চলতি বাজেটেও কৃষকদের নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কোনও উল্লেখ রাখেননি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এখনও হরিয়ানা পঞ্জাব সীমান্তে নিজেদের দাবির জন্য আন্দোলনে রয়েছেন কৃষকরা। তাঁদের শীর্ষ নেতৃত্ব দেখা করেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। কেন্দ্রের নড়বড়ে সরকার এখনও যাদের বিষয়ে উদাসীন, সেই কৃষকদের ইস্যুকে সামনে রেখেই বাজেট বিরোধিতায় আওয়াজ তোলেন রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেন, কৃষকদের জন্য বাজেট আনবে I.N.D.I.A. জোট। জোটের পক্ষ থেকে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন এই সংসদেই কৃষকদের দাবি মেনে এমএসপি-র বিল পাশ হবে।

মধ্যবিত্তের জন্য বাজেটকে করের সন্ত্রাসবাদ বলে দাবি করেন রাহুল গান্ধী। তিনি উদাহরণ দেন, যখন কোনও ছোট ব্যবসায়ী রাতে ঘুমাতে যান, তাঁর কাছে আয়কর দফতরের ফোন আসে। অথচ বড় ব্যবসায়ীদের আয়করে সব রকম ছাড়ের সুযোগ দেওয়া রয়েছে বাজেটে। মধ্যবিত্ত বিরোধী বাজেটে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে প্রাধান্য দিয়ে ‘ট্যাক্স টেররিজম’ চালিয়েছে মোদি সরকার, দাবি করেন রাহুল।

সেই সঙ্গে দেশের ৭৩ শতাংশ সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য বাজেটে কিছু নেই বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, বাজেট পেশের আগে হালুয়া বিলির যে ছবি নির্মলা সীতারমণ প্রকাশ করেছিলেন, বাজেট সেই ছবিকেই প্রতিফলিত করে। সেই ছবিতে যেভাবে ২০ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র একজন সংখ্যালঘু ও একজন অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ব্যক্তি হালুয়া পেয়েছিলেন, সেভাবেই বাজেট বিতরণের সময়ও সেই ৭৩ শতাংশের ভাগে কিছু পড়েনি। এই উদাহরণ তুলে ধরতে যতবার অর্থমন্ত্রকের ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেন বিরোধী দলনেতা, ততবার লোকসভা সম্প্রচার করা ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।

নির্মলা সীতারমনের বাজেটকে দেশের যুব সম্প্রদায়কে চক্রব্যূহের মাঝে ঢুকিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। করের ক্ষেত্রে যেখানে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেখানেই একমাত্র দেশের যুব সম্প্রদায় চাকরি পেতে পারেন, এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র যুব সম্প্রদায় নয়, মোদি সরকারের এই চক্রব্যূহে কৃষক, মধ্যবিত্ত, ছোট ব্যবসায়ী, ভারতীয় সেনা থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভরে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেন রাহুল। আর এই চক্রব্যূহ মাত্র তিনটি মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমত, অর্থের কেন্দ্রীকরণ। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় এজেন্সি, ও তৃতীয়ত রাজনৈতিক প্রভাবিত আধিকারিক। সেই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করারও অভিযোগ তোলেন তিনি। সর্বশেষে তিনি দাবি করেন, সংবাদমাধ্যমকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাঁদের বাইরে বেরোতে দেওয়া হোক।