পরিচালক রাহুলের সাসপেনশনে ‘টলিউডের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কুণাল! 

0
1

ফেডারেশনের শাস্তির কোপে ‘কিশমিশ’ পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়(Rahool Mukherjee)। পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে টলিউড (Tollywood ) শুটিং জগতের তথাকথিত কর্তা ব্যক্তিদের নিশানা করলেন তৃণমূল নেতা! বাংলাদেশে একটি ছবির জন্য রাহুল নিয়ম বহির্ভূতভাবে শুটিং করেছে এই অভিযোগে তাঁকে আপাতত তিন মাসের জন্য ‘নির্বাসন’ দেওয়া হয়েছে। এই আবহে প্রসেনজিৎ -অনির্বাণ অভিনীত পুজোর ছবির শুটিংয়ের দায়িত্বও চলে গেছে অন্য পরিচালকের হাতে। রাহুলের সঙ্গে যেটা হয়েছে তার বিরুদ্ধে গিয়ে ফেডারেশনের (FCTWEI ) সমালোচনা করেছেন রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty) থেকে শুরু করে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের (Kamaleswar Mukherjee) মতো পরিচালকরা। রাজনীতির মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে ইন্ডাস্ট্রির একাংশ বলছে রাহুলের প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে ফেডারেশনকে। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ‘টলিউডের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন কুণাল ঘোষ।

বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘চরকি’তে ‘লহু’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ় পরিচালনা করছেন রাহুল ( সিনেমায় অভিনয় করছেন সোহিনী সরকার)। সে গল্প লিখেছেন কুণাল নিজেই। সেই সিরিজ়ের শুটিং হওয়ার কথা ছিল এ পার বাংলাতেই। কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশের ওটিটি, তা-ই পশ্চিমবঙ্গে শুটিংয়ের খরচ বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাজেট বহির্ভূত খরচের সম্ভাবনা দেখে বাংলাদেশের ওটিটি গোষ্ঠী পশ্চিমবঙ্গের শুটিং করতে রাজি হয়নি। রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নাকি ফেডারেশনকে না জানিয়ে পদ্মাপাড়ে গিয়ে শুটিং সেরেছেন। এরপরই শনিবার ‘ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান এন্ড ওয়ার্কার্স ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র (FCTWEI ) সভাপতি সুব্রত সেন এবং সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় ইমেল করেন পরিচালককে এবং তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির ঘোষণা করা হয়। রাহুল অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এরপরই টলিউডের অনেকেই চলচ্চিত্র ফেডারেশনের উপর ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ঘোষণায় ভুল থাকলেও শাস্তি সমর্থন করি না। আলোচনা হতে পারত। ফেডারেশনের কিছু কাজ টলিউডের ক্ষতি করছে। প্রযোজক, পরিচালকেরা বিরক্ত হচ্ছেন। কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আজ কেউ মুখ খুলছে না, কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাকছে। আরও কাজ আসার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হচ্ছে।’

বেশ কয়েক বছর ধরেই টলিউডে নিজেদের একচ্ছত্র কায়েম রাখার জন্য নানা ধরনের ‘নিয়ম’ কার্যকর করার অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। অনেক প্রযোজক পরিচালকদের অভিযোগ, তথাকথিত নিয়মের দোহাই দিয়ে বাংলায় শুটিং করার ক্ষেত্রে খরচ এতটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাজেটের ভয়ে বলিউডেও আর বাংলা ছবির গল্প ভাবা হচ্ছে না। এতে আখেরে ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি হচ্ছে। কট্টর সিপিএম বলে পরিচিত পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় রাহুলের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। আরেক পরিচালক রাজ চক্রবর্তী নাম না করেই বিঁধেছেন ফেডারেশনের অন্যতম ‘কর্তা’কে। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। সৃষ্টিশীল কাজে, স্বাধীন পরিচালকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কোনও সংগঠনের নেই। আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো কাজ করব। কেন এ ভাবে বার বার বাধার সৃষ্টি করা হবে?’ তবে শাস্তির বিরোধিতা করলেও কুণাল মনে করেন, রাহুলের উচিত ছিল গোটা বিষয়টা ফেডারেশনকে জানিয়ে করা। কিন্তু তাঁর নিশানাতেও কি স্বরূপ বিশ্বাস? তৃণমূল নেতা পোস্টে কারোর নাম উল্লেখ করেননি। তবে টলিউডের ওয়াকিবহালদের ধারণা ফেডারেশনের ডিসিশন মেকারের দিকেই আঙ্গুল তুলতে চেয়েছেন কুণাল। এই বিষয়ে স্বরূপ বিশ্বাস (Swarup Biswas) জানিয়েছেন গোটা ব্যাপারটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে, প্রয়োজনে কুণাল ঘোষের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। কার্যত পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এই মুহূর্তে দ্বিধাবিভক্ত বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রি।