২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় ডুয়ার্সের মাদারিহাটে নিজের চোখেই বন্ধ বান্দাপানি চা বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা দেখে গিয়েছিলেন নির্মলা সীতারামন। এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে সেই নির্মলাদেবী কেন্দ্রীয় বাজেটে চা শ্রমিকদের উন্নয়নে কোনও পৃথক বরাদ্দ না করায় বা প্যাকেজ না দেওয়ায় হতাশ ডুয়ার্সের চা বলয়।আগের বাজেটে কোনও সুনির্দিষ্ট দিশা দেখানো হয়নি। এবারও তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম বাজেটেও ব্রাত্য রয়ে গেল চা-বাগান। উত্তরের চা-শিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটে একটি কথাও খরচ করলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী । এবারের বাজেটেও দুয়োরানিই হয়ে রইল উত্তরের চা-শিল্প। উত্তরের চা-শিল্প নিয়ে বছরের পর বছর সরাসরি বঞ্চনাই করে গেল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এর আগে একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে আলিপুরদুয়ারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চা-শিল্পের জন্য এক হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায় সেদিন চা-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই ঘোষণা যে শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল সেটা মানুষ বুঝতে পারে নির্বাচন মিটে গেলে।
এই দেশে চা-শিল্প এমন একটি শিল্প, যেখানে প্রত্যক্ষভাবে সব থেকে বেশি শ্রমিক কাজ করেন। এবং এই শিল্পের মাধ্যমে একটি ভাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় দেশের। এবছর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা ও পোকার আক্রমণে অসম ও উত্তরবঙ্গে চায়ের উৎপাদন দরুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা আশা করেছিলেন যে, এবারের বাজেটে চা-শিল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ভাল কিছু চিন্তাভাবনা করবেন। কিন্তু বাজেট দেখবার পর কার্যত হতাশা ব্যক্ত করেছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলেই। এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার মাঝের ডাবরি চা-বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, প্রাকৃতিক কারণে এবার উত্তরবঙ্গ ও অসমে চায়ের উৎপাদন খুব মার খেয়েছে। তাই আমরা আশা করেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের এই চা- শিল্পের জন্য কিছু সহায়তা ঘোষণা করবে, কিন্তু বাজেট দেখে আমরা হতাশ।
চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অসীম মজুমদার বলেন, বিজেপি সরকারের কাছে এটাই প্রত্যাশিত ছিল। ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের থেকেও অসমের চা শ্রমিকদের দুর্দশা আরও বেশি। সেখানে ডুয়ার্সের চা শ্রমিকরা তো বিজেপির কাছে অনেক দূরের বিষয়। বিজেপি চা শ্রমিকদের প্রতারণা করে শুধু ভোটই নেয়। এটাই তার প্রমাণ হল।