মঙ্গলবার থেকে শুরু হল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের পিএইচডির ক্লাস। শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনই ক্লাসে এলেন মাওবাদী বন্দি অর্ণব দাম। দীর্ঘ টালবাহানার পর গত সপ্তাহে অর্ণবের কাউন্সেলিং সম্পন্ন হয়। সেদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ভবনে কাউন্সেলিংয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল অর্ণবকে। সেখানেই তাঁর কাউন্সেলিং হয়। এরপর গত শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান জেলা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের ইতিহাস বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় অর্ণবকে। সেখানে তার ভেরিফিকেশন হয়।
আজ, মঙ্গলবার থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তেও অর্ণবের ক্লাসে আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।কারণ, বর্ধমান জেলা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে সোমবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ণব দামকে পাঠানো যাবে না। সেই ক্ষেত্রে অর্ণব কীভাবে ক্লাস করবে, তা নিয়েই ফের জটিলতা তৈরি হয়। প্রথম দিনের ক্লাসে তিনি যোগ দিতে পারবেন কিনা তাও নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না।যদিও গবেষণার ক্ষেত্রে অর্ণবের গাইড কে হবেন, তা এখনও স্থির হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় প্রধান তানভীর নাসরিন বলেন, এখন ছয় মাসের কোর্স ওয়ার্কের পর অর্ণবের গাইড কে হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ছ’মাস পর একটা পরীক্ষা আছে। সামাজিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করার কথা অর্ণবের।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে থাকা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই হামলায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। পাঁচ জন মাওবাদীও মারা গিয়েছিলেন। শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে অর্ণবকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজা ঘোষণা হয়। তার পর থেকে প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেল, তার পরে গত ১৭ মার্চ থেকে অর্ণবের ঠিকানা হয় হুগলির চুঁচুড়া সংশোধনাগার। সেখানকার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে অর্ণব পড়াশোনা করেন। তিনি আগেই ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর হয়েছেন।