চণ্ডীগড়- ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের (Chandigarh Dibrugarh Express Accident) দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নাশকতার তত্ত্ব তুলে ধরে দায় এড়াতে চাইল ভারতীয় রেল (Indian Railways)। তদন্তই শুরু হলো না, অথচ তার আগেই নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে সাফাই দেওয়া শুরু রেলের। অতীতেও বারবার এই একটাই শব্দ উচ্চারণ করতে দেখা গেছে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাকে। ওড়িশা হোক বা বাংলা, অন্ধ্রপ্রদেশ হোক উত্তরপ্রদেশ রেল দুর্ঘটনা মানেই ভারতীয় রেলের আপ্তবাক্য ‘নাশকতা’। ১৭ জুন ফাঁসিদেওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর ১৮ জুলাই ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। এবার উত্তরপ্রদেশের (Uttarpradesh) গোন্ডায় লাইনচ্যুত যাত্রীবাহী ট্রেন। ১২টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পাশাপাশি চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত একাধিক। কী কারণে দুর্ঘটনা তার তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই, ‘নাশকতা’র তত্ত্ব তুলে ধরে রেলের সাফাই লোকো পাইলট নাকি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছিলেন! রক্ষণাবেক্ষণ, পর্যবেক্ষণ বা চালকের ত্রুটি সব পিছনের সারিতে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করা ভারতীয় রেলের তরফে এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের আড়াই লক্ষ এবং বাকি আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ডিব্রুগড়ের রেল দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘ইউপির গোন্ডায় আজ আরেকটি মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার কথা জেনে দুঃখিত! আরেকটি ট্রেন লাইনচ্যুত, এ বার চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস! রেল কর্তৃপক্ষ কী করছে!! ভারত সরকার কী করছে!! যাত্রীদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা সর্বাগ্রে! সরকারের বুদ্ধি কবে আসবে? শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা, আহতদের জন্য প্রার্থনা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁর পোস্টে মোদি সরকারকে টার্গেট করে লেখেন, ‘ উত্তরপ্রদেশে চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত হল। মোদি সরকার কীভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রেল নিরাপত্তাকে বিপন্নতার মুখে ফেলেছে তার আরেকটি উদাহরণ।’ বুধবার রাত ১১টা ৩৯ মিনিটে চণ্ডীগড় থেকে ছেড়েছিল ট্রেনটি। এদিন দুপুরে ট্রেনটি গোন্ডার ঝিলহি স্টেশনের কাছাকাছি আসার পর হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। এরপরই ট্রেনটি কাঁপতে শুরু করে এবং লাইনচ্যুত হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ট্রেনটির উল্টে থাকা বগিগুলির পাশে মালপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীরা। অনেককে, ট্রেনের দরজা বেয়ে উঠে ভিতর থেকে মাল বের করতেও দেখা যায়। বাঁদিকে কাত হয়ে পড়ে থাকা একটি কোচের উপরও কয়েকজন যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ট্রেনটির চারটি এসি কোচের সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। দুটি বগি সম্পূর্ণ উল্টে গিয়েছে।