রাজ্য সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপে অবশেষে সোমবারই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ভর্তি হতে চলেছেন জেলবন্দি অর্ণব দাম। রবিবারই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হল বর্ধমান সংশোধনাগারে। সোমবার সেখান থেকেই উপযুক্ত নিরাপত্তায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য। সেখান থেকেই পরবর্তী ঘোষণা করা হবে।
ইতিহাস বিষয়ে গবেষণার প্রবেশিকার পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন জেলবন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। কিন্তু ভর্তি নিয়ে অযথা জটিলতা তৈরি করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। এরপরই এই জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী হন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। একদিকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে ফোনে তিনি কথা বলেন। অন্যদিকে কারামন্ত্রী অখিল গিরি ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও কথা বলেন। কারা দফতর থেকে বর্ধমান সংশোধনাগারে তাঁকে রেখে গবেষণা সম্পূর্ণ করানোর বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাঁকে সোমবার ভর্তির জন্য অন্তর্বর্তী প্যারোল মঞ্জুর করেন এডিজি কারা।
কারা দফতরের নির্দেশ মতোই হুগলি সংশোধনাগার থেকে তাঁকে রবিবার স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান সংশোধনাগারে। উপাচার্য ইউজিসি নিয়ম অনুযায়ী হুগলি সংশোধনাগারকে প্রশ্ন করেছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি রয়েছে কিনা। দ্বিতীয়ত, অর্ণব সশরীরে ক্লাস করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে। তৃতীয়ত, গবেষণার জন্য় আদালতের অনুমতি রয়েছে কিনা। প্রথম দুটি প্রশ্ন নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকলেও তৃতীয় প্রশ্ন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়।
হুগলি সংশোধনাগার রাজ্য কারা দফতরের অনুমতিপত্র ও নিরাপত্তা বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সোমবারই অর্ণবের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছে। আদালতের অনুমতির বিষয়ে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট বার্তা, দোষী সাব্যস্ত ও জেলবন্দি শাস্তি ভোগ করা আসামীর ক্ষেত্রে আদালতের নতুন কোনও দায়িত্ব থাকে না। তাঁর বিষয়ে পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত রাজ্য কারা দফতরই নেয়। রাজ্যের তরফ থেকে অর্ণবের ভর্তি নিয়ে কোনও জটিলতা রাখা হয়নি। এখন অপেক্ষা সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব পথ পরিষ্কার করে রাখার পরে ভর্তি প্রক্রিয়া কতটা দ্রুত করায়। মেধা তালিকায় প্রথম স্থানাধিকারী অর্ণব ভর্তি না হলে পরবর্তী স্থানাধিকারীদেরও ভর্তি আটকে রয়েছে।