বাংলার দক্ষিণ ঘাম প্যাচ প্যাচ। কয়েকদিনের জন্যে উত্তুরে ঠান্ডা হাওযা লাগাতে চান অনেকেই। কিন্তু পায়ের তলায় সর্ষে রাখা বাঙালির আর দিপুদা-র শেষ অক্ষরে মন ভরে না। তারা খোঁজে অফবিট। যেখানে তেমন ভাবে পা পড়েনি পর্যটকদের। সেই অজানা পর্যটনস্থলের চাহিদাই এখন তুঙ্গে। আর ক্ষমতায় আসার পরে দার্জিলিং-এর পর্যটনকে ঢেলে সাজিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক অজানা জায়গায় তৈরি হয়েছে পর্যটন স্থল। রয়েছে হোমস্টে ভ্রমণ পিপুসাদের জন্য দেওয়া হল শৈলশহরের (Darjeeling) অফবিট পাঁচটি নতুন জায়গার সন্ধান।
সাওয়াজি খোলা
মানেভঞ্জনের কাছে রঙ্গিত মাজোয়া অঞ্চলের ছোট্ট একটি পাহাড়ি গ্রাম। জঙ্গল ঘেরা এই অঞ্চলটি সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্কের বর্ধিত অংশ। পাশেই বইছে রঙ্গিত নদী। হাঁটা পথে দেখা মিলবে বেশ কিছু পাহাড়ি ঝর্নার। আকাশ পরিষ্কার থাকলে গ্রামের বেশ কিছু জায়গা থেকে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাও।
কোথায় থাকবেন?
চারটি সুসজ্জিত রুম নিয়ে রয়েছে ছোট্ট হোমস্টে (Home Stay)। জানলা খুলেই হিমালয়ান রেঞ্জ | প্রতিটি রুম অ্যাটাচ বাথরুম, গিজার। সামনে খোলা জায়গা। একসঙ্গে ১৬ জন থাকতে পারবেন। থাকা-খাওয়ার খরচ- জনপ্রতি দৈনিক ১২০০ টাকা
নিকটবর্তী টুরিস্ট স্পট
মাজোয়া ফরেস্ট, রঙ্গিত নদী, মানেভাঞ্জন, টুঙলু, টুমলিং, ধোত্রে, লেপচাজগৎ
কাটিদ্বারা
দার্জিলিং টাউন থেকে মাত্র ২৫ কিমি দূরে লামাহাট্টার কাছাকাছি নতুন পাহাড়ি জনপদ। চারিদিকে পাহাড় ও তার বুক চিরে সবুজ চা বাগান। এখানে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার বিস্তীর্ণ রেঞ্জ স্পষ্ট দেখা যায়। এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করার মতো।
কোথায় থাকবেন?
গ্রামের এক প্রান্তে একদম নিরিবিলিতে রয়েছে ঝাঁ চকচকে হোমস্টে (Home Stay)। মোট পাঁচটি রুম। প্রতিটি রুম সুসজ্জিত। অ্যাটাচ বাথরুম, গিজার। জানালা দিয়েই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। থাকা-খাওয়ার খরচ- জনপ্রতি দৈনিক ১৪০০ টাকা
নিকটবর্তী টুরিস্ট স্পট
তাকদা, তিনচুলে, লামাহাট্টা, তিস্তা ত্রিবেণী, রংলি রংলিওট, রকগার্ডেন, ঘুম, দার্জিলিং
থাপা ভ্যালি
রঙ্গিত নদীর অদূরে বিজনবাড়ি অঞ্চলের ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। উল্টোদিকে বিস্তীর্ণ চা বাগান। পায়ে হাঁটা দূরত্বের মধ্যে বেশ কিছু পাহাড়ি ঝোরা আছে।
কোথায় থাকবেন?
তিনটি সুসজ্জিত রুম নিয়ে ছোট্ট একটি নতুন হোমস্টে। বারন্দা থেকেই দেখা যায় পাহাড়ের বিস্তৃর্ণ রেঞ্জ। অ্যাটাচ বাথরুম, গিজারের সুবিধা-সহ প্রতি রুমে চারজন করে থাকা যায়। এক্সট্রা বেড দিয়ে মোট ১২ জন পর্যন্ত থাকতে পারেন। প্রচুর চাষাবাদ হয়। অধিকাংশ শাকসবজি রান্না হয় নিজস্ব বাগান থেকে নিয়ে। থাকা-খাওয়ার খরচ- জনপ্রতি দৈনিক ১৪০০ টাকা
নিকটবর্তী টুরিস্ট স্পট
ঝেপি, বিজনবাড়ি, রেলিং, মিম, ধোত্রে, ছোটা রঙ্গিত
জিম্বাগাঁও
মিরিক থেকে অল্প দূরে ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ আস্তানা হিসেবে আদর্শ। কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য থেকে চা বাগান- সবই আছে।
কোথায় থাকবেন?
ঘর দেখলে মনে হবে থ্রি স্টার হোটেল বা রিসর্ট। চারটি ফ্যামিলি রুম। বারান্দা থেকে নয়নাভিরাম দৃশ্য। তবে, ধর্মীয় কারণে এখানে ইদানীং মাছ-মাংস রান্না হয় না। অর্গানিক ভেজিটেবিল সিজলার, পাহাড়ি মিক্স ভেজ, মাশরুম, পনির ইত্যাদি পদগুলির সুনাম আছে। নিরামিষরা বারংবার আসেন এখানে। থাকা-খাওয়ার খরচ- জনপ্রতি দৈনিক ১৮০০ টাকা
নিকটবর্তী টুরিস্ট স্পট
গোপালধারা চা বাগান, মিরিক লেক, ওকার মনেস্ট্রি, পশুপতি মার্কেট
মিমবস্তি
সুখিয়াপোখরী থেকে খুব কাছাকাছি। বিশেষ আকর্ষণ বিস্তীর্ণ চা বাগান আর কাঞ্চনজঙ্ঘা। হেরিটেজ চা বাংলো আছে, ব্রিটিশ আমলের চা ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখা যায়। কিছু দূরে বয়ে চলেছে রঙ্গিত নদী।
কোথায় থাকবেন?
একদম চা বাগানের মধ্যে তিনটি রুম নিয়ে ছোট্ট একটি হোমস্টে। সব মিলে ১২ জন থাকা যায়। খোলা জানলা। বড়সড় বাথরুম, গিজার আছে। থাকা-খাওয়ার খরচ- জনপ্রতি দৈনিক ১৪০০ টাকা
নিকটবর্তী টুরিস্ট স্পট
ছোট রঙ্গিত নদী, ঘুম স্টেশন ও মনেস্ট্রি, বাতাসিয়া লুপ, জোরপোখরিএতটা পড়ে নিশ্চয় ব্যাকপ্যাক গোছাতে বসে গিয়েছেন। তাহলে জানিয়ে রাখি, আরও অনেকেই কিন্তু এই পথের যাত্রী। সুতরাং ট্রেন ও বাসের টিকিটের সন্ধান করুন তাড়াতাড়ি। আর যদি গাড়ি করে যেতে চান তাহলে মাইলেজটা হিসেব করে নিন। বাকি সব কিছুর সন্ধান তো রইলই।