১২ বছর আগে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার সাজা ঘোষণা করল বিষ্ণুপুর (Bishnupur) মহকুমা আদালত। দোষী ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শুনিয়েছেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারপতি অনিরুদ্ধ মাইতি। ২০১২-এ বাঁকুড়ার (Bankura) জয়পুরে তৃণমূলের (TMC) নেতাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় মঙ্গলবারই ৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার, সাজা ঘোষণা করে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালত।বাঁকুড়ার (Bankura) জয়পুরের বৈতল এলাকার বাসিন্দা গোলাম কুদ্দুস শেখ খুন হন ২০১২-র পয়লা জানুয়ারি। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্দিরা আবাসনের টাকা তছরূপের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই অভিযোগে জয়পুরের উত্তরবাড় অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বাবর আলি কোটালের নেতৃত্বে বৈতল-সহ স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা গোলাম কুদ্দুস শেখকে লাঠি, টাঙ্গি, কাটারি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। কোপানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুদ্দুস শেখকে সেখানেই ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তাঁরা। পরে কুদ্দুসকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে বাঁকুড়া হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বাবর আলি কোটাল-সহ ২ পঞ্চায়েত সদস্য লাল মহম্মদ ভুঁইয়া ও রাজন মণ্ডল-সহ ৪১ জনের নামে জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গোলাম কুদ্দুসের দাদা ইউসুফ আলি শেখ। প্রাথমিক তদন্তের পর ১৩ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। ১২ বছর ধরে মামলা চলার পরে মঙ্গলবার মোট ৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অনিরুদ্ধ মাইতি। বাবর আলি কোটাল ছাড়াও লাল মহম্মদ ভুঁইয়া, রাজন মণ্ডল, শুকুর ভুঁইয়া, ইয়ামিন ভুঁইয়া, নবীয়াল মণ্ডল এবং হোসেন মণ্ডলদেরও ওই সাজা শোনানো হয়।
৭ জনকেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ১৪৯ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ৩২৪ ধারায় ৩ বছর কারাদণ্ড ও ৩২৫ এবং ১৪৯ ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। যদিও ১ জুলাই থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির বদলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম চালু হয়েছে। ১৪৭ ধারায় ২ বছর কারাদণ্ড ও ১৪৮ ধারায় ৩ বছর কারাদণ্ডর নির্দেশ দেন। বিভিন্ন ধারায় সব সাজা একসঙ্গে থাকবে বলে জানান বিচারক অনিরুদ্ধ মাইতি। তবে, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদনের রাস্তা খোলা থাকছে বলে আদালত সূত্রে খবর।