রাজ্যের আলু-পেঁয়াজেই মিটবে চাহিদা, পথ বাতলে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

0
1

রাজ্যের চাষিরা চাষ করে সঠিক দাম পাননি। অথচ দেশের অন্যত্র থেকে পেঁয়াজ, আলুর মতো সবজি এনে বাংলার বাজার ভরিয়ে বাজার দর বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই একদিকে রাজ্যের মানুষের পকেটের সুরাহা করতে ও অন্যদিকে রাজ্যের চাষিদের ঘরে সঠিক মূল্য তুলে দিতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটানোর পরই রাজ্যের আলু ও পেঁয়াজ বাইরে বিক্রি করা নিয়ে কড়া নির্দেশ মঙ্গলবারের বৈঠক থেকে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পেঁয়াজ কেন নাসিক থেকে আসে, আধিকারিকদের বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, “নাসিক থেকে পেঁয়াজ কেন আনেন। এখানে পেঁয়াজের স্টোরও বানিয়ে দিয়েছি। নাসিক থেকে পেঁয়াজ আনতে গেলে পরিবহন খরচ কী বাড়ছে না।” বাজারে পেঁয়াজের দাম কমানো নিয়ে কড়া নির্দেশ দেন তিনি। সুফল বাংলার আউটলেট থেকে পেঁয়াজ সহ সব সবজি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বাজারের থেকে ৮টাকা কম দামে। সুখসাগর পেঁয়াজ বিক্রি করলে সেই দাম আরও কমে যাবে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।

বিশেষভাবে পেঁয়াজ নিয়ে তিনি নির্দেশ দেন, “নাসিকের পেঁয়াজের উপর ভরসা না করে আপনারা আমাদের নিজস্ব সুখসাগর পেঁয়াজে ভরসা করুন। আমরা কেন চাষিদের কাছ থেকে আরও বেশি করে কিনছি না। তাহলে চাষিরা দামটা পায়।” সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পেঁয়াজ পাঠানো নিয়েও তিনি নির্দেশ দেন, “আমার পেঁয়াজ চলে যাচ্ছে বাংলাদেশে। যেতে আপত্তি করিনি, আমার চাহিদা মিটিয়ে যাবে। আমার পেঁয়াজ এখানে বিক্রি না করে মুনাফাখোররা নিয়ে যাচ্ছে অন্য দেশে। আমার রাজ্য কেন সাফার করবে। নাসিক থেকে নিন।” রাজ্যে ৪ হাজার পেঁয়াজ গোলা থাকার তথ্যও পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং নির্দেশ দেন সেখান থেকে পেঁয়াজ কেনার।

পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুচাষি ও বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “এবছরই আলুচাষিদের ৩২২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। ১ ক্ষতিগ্রস্থ চাষিকে ৩১৩৩ কোটি সাহায্য় করা হয়েছে। ওরা ভালো করে তৈরি করুক। বাজারে মানুষ যাতে সস্তায় পায়।” এখানেই মুনাফালোভীদের একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, “কিছু লোক আছে বেশি মুনাফার লোভ। এর ফলে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করা হয়। এসব নানা রকম চক্র কাজ করে। এসব চক্র চোখে দেখা যায় না।”

সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, “৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কোল্ড স্টোরেজে রয়েছে।” কেন এভাবে আলু ধরে রেখে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি নির্দেশ দেন, “২৫ শতাংশ কোল্ড স্টোরেজে রেখে বাকি আলু বাজারে ছাড়ুন। পুরোটা একসঙ্গে ছাড়বেন না। মাসে ৬ লক্ষ মেট্রিক টন করে আলু বের করুন।” সেই সঙ্গে কোল্ড স্টোরেজে বীজের আলু আলাদাভাবে তৈরির করারও নির্দেশ দেন।

বাজারে আলুচাষিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা তৈরির করা ও কোল্ড স্টোরেজের জন্য সুবিধা করার পরেও আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাজারে এত দাম কারা নিচ্ছে। এই আলু রাজ্যের বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে না তো? সীমান্তে চেকিং হবে।” এই প্রসঙ্গে এসটিএফ-কে চেকিংয়ের দায়িত্ব দেন তিনি।