টানা বৃষ্টির (Rain) পর এবার নয়া আতঙ্ক! শনিবার আচমকাই কেঁপে উঠল সিকিম (Sikkim)। সূত্রের খবর, এদিন সকালে সিকিমের টাডং এলাকা থেকে ৭৮ কিলোমিটার দূরে কম্পন অনুভূত হয়। যার বড়সড় প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ পূর্ব সিকিমের বিস্তীর্ণ অংশে। এই ভূমিকম্পের জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পর্যটকদের (Tourists) মধ্যে। রিখটার স্কেলে এদিনের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ২.৯। স্বল্প মাত্রার কম্পন হলেও প্রশাসন সূত্রে খবর, সকাল থেকেই সিংটাম থেকে রংপো পর্যন্ত সড়কপথে বড় বড় পাথরের চাঁই পড়ছে। অন্যদিকে, ১৯ মাইলের কাছে রাস্তায় বোল্ডার পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। পাশাপাশি পাহাড় থেকে ঘন ঘন পাথর গড়িয়ে পড়ার কারণে পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে সময় যত গড়াচ্ছে ততই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। একদিকে যেমন বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণ নেই ঠিক তেমনই দীর্ঘদিন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হওয়ার কারণে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তিস্তার ভয়াল গ্রাসে ধস নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গা। আর জাতীয় সড়ক বন্ধ হওয়ার কারণে একদিকে যেমন বিপদে পড়েছেন পর্যটকরা, ঠিক তেমনই মহা ফ্যাসাদে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। সূত্রের খবর, দুর্যোগের কারণে ইতিমধ্যে অনেক পর্যটকই বুকিং বাতিল করে দিয়েছে বলে খবর। চলতি বছরের জুন মাসের শুরু থেকে টানা বৃষ্টিতে দফায় দফায় ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কালিম্পং, সিকিমের অংশে নানা জায়গায় জাতীয় সড়ক ধসের কারণে একেবারেই যাতায়ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলা সিকিম যোগাযোগের একমাত্র লাইফ লাইন এই জাতীয় সড়ক। আর গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ছে পর্যটনেও। গত জুন মাসেই ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে পর্যটকদের অসুবিধা না হলেও ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কালিম্পং হয়ে সিকিম যেতে বেজায় সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকরা। তাঁদের গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। আর সেকারণেই ধীরে ধীরে এই পরিস্থিতিতে পাহাড় যাওয়ার প্ল্যান বাতিল করে দিয়েছেন অনেকেই।
গত ২৩ মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১১ বার বন্ধ রাখতে হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাহাড়ের পর্যটন ব্যাপকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এই ক্ষতির প্রভাব পুজো পর্যন্ত চলবে। তবে বর্তমান যা হিসেব তাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। জুন মাসে যেখানে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ বুকিং ভর্তি থাকে, সেখানে বুকিং নেমে এসেছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশে। জুলাই মাসে বর্ষার কারণে এমনিতেই বুকিং কমে ৬০ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু জাতীয় সড়কের কারণে তা নেমে এসেছে ৭ থেকে ১০ শতাংশে।