আদৌ খুলবে পুরীর মন্দিরের রত্নভাণ্ডার? দিনক্ষণ ঘোষণা নিয়ে ‘রাজনীতি’ বিজেপির

0
1

কবে খুলবে পুরীর (Puri) মন্দিরের রত্নভাণ্ডার (Ratna Bhandar)? তা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে উদ্দীপনার শেষ নেই। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Election) নবীন পট্টনায়েককে সরিয়ে নয়া সরকার গঠন করেছে বিজেপি (BJP)। গেরুয়া শিবিরের দাবি, তারা সরকারে আসার পরই পুরীর রত্নভাণ্ডার খোলা হবে। ইতিমধ্যে, সেই কাজের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শনিবার নতুন তদারকি কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ৯ জুলাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি এদিন বৈঠকের পর স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, রত্নভাণ্ডারের ডুপ্লিকেট চাবি বাহির রত্নভাণ্ডারেই রয়েছে। জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের মুখ্য প্রশাসক ৯ জুলাই উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে সেই চাবি তুলে দেবেন। তবে দীর্ঘদিন অব্যবহারে জীর্ণ তালা যদি সেই চাবিতে না খোলা যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে তালা ভাঙা হবে। এবিষয়ে একটি কার্যাবলি প্রস্তুত করে তা দ্রুত সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

এদিন বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ সাফ জানিয়েছেন, এই রত্নভাণ্ডারের সোনাদানার হিসেব নিকেশ করার কাজ মোটেও সহজ হবে না। তিনি আরও জানান এদিন রত্নভাণ্ডার খোলা, ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে সামগ্রিক কথাবার্তা হয়েছে। তালা ভাঙার বিষয়ে সরকারের কাছে অনুমতিও চাওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রত্নভাণ্ডারের ভিতর জল পড়ছে। সুতরাং চটজলদি তার মেরামতি প্রয়োজন। কিন্তু সেই কাজের জন্য জগন্নাথের সমস্ত অলঙ্কারাদি অন্যত্র সরাতে হবে। তিনি আরও জানান, রত্নাবলির মূল্য নির্ধারণ ও কোনটি কোন ধাতু বা রত্ন, তা চেনার কাজে সাহায্য করার জন্য জহুরির সাহায্য নেওয়া হবে। তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস উল্টোরথের আগেই রত্নভাণ্ডার খোলার চেষ্টা করা হবে।

দীর্ঘ ৪৬ বছর আগে ১৯৭৮ সালে শেষবার মন্দিরের এই ভাণ্ডার খোলা হয়েছিল। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ জানিয়েছে, রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের দেওয়ালে অবিলম্বে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। গত রবিবারই ওড়িশার নয়া মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার খোলা হবে। সেটির পর্যবেক্ষণের পর সম্পূর্ণরূপে সংস্কারের কাজও শুরু হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। জগন্নাথ মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর অন্তর রত্নভাণ্ডার খুলে ভিতরের কক্ষে সমস্ত জিনিসপত্র খতিয়ে দেখতে হয় এবং সম্পত্তি অডিট করতে হয়। তবে ১৯৭৮ সাল থেকে কোনও অডিট হয়নি বলে খবর।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের ভিতরে প্রায় ৮৬২ বছরের পুরনো ধন সম্পত্তি রয়েছে। কথিত আছে, জগন্নাথ মন্দিরের তিন দেবতা জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার যাবতীয় অলঙ্কার এই রত্নভাণ্ডারে রাখা আছে। শুধু তাই নয়, মূল্যবান বাসনপত্রও রাখা আছে রত্নভাণ্ডারে। তবে গত ৪০ বছর ধরে বন্ধ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার। কিন্তু আদপে তার ভিতরে কী রয়েছে, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। মন্দিরের সেবায়েতদের মতে, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে রত্নভাণ্ডারে যা সম্পত্তি রয়েছে, তা দেশ তথা বিশ্বের কোনও মন্দিরে নেই।  আশ্চর্যজনকভাবে কেউ কেউ বলেন, পুরীর রত্নভাণ্ডার পাহারা দিচ্ছে নাগরাজ। সেকারণেই রত্নভাণ্ডারের দরজা বন্ধ থাকে। কেউ সাহসও দেখান না এই রত্ন ভাণ্ডার খোলার। কিন্তু আদতে কী রয়েছে এই রত্ন ভাণ্ডারে, তা জানা যাবে সম্ভবত দরজা খোলার পরই।