রাশিয়ার উপর ক্ষে.পণাস্ত্র হা.মলা আমেরিকার! দেখে নেওয়ার হু.মকি পুতিনের

0
2

ইউক্রেনের সঙ্গে ২০২২ সাল থেকে যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বে বিভাজন দেখা দিয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, জাপান-সহ বহু দেশ একজোট হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। তারা প্রত্যেকেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমর বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সম্প্রতি, রাশিয়ায় জোড়া হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে দাগিস্তান এলাকায়। কয়েক জন আততায়ী সেখানকার গির্জা এবং ইহুদিদের মন্দিরে হামলা চালায়। গির্জার পাদ্রির গলা নৃশংস ভাবে কেটে ফেলা হয়।এই আবহেই গত রবিবার রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইউক্রেন। গত দু’বছর ধরে ইউক্রেন মূলত রুশ আক্রমণ প্রতিহত করে আসছিল। রবিবার রুশ অধিকৃত অঞ্চলে সরাসরি হামলা চালায় তারা।

অনেকেই আশঙ্কা করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে আর যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকবে না, ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও। ক্রিমিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে মস্কো। রাশিয়া মনে করছে এই হামলা ইউক্রেন চালালেও এর নেপথ্যে রয়েছে আমেরিকা। এই হামলার ঘটনার পরই রাশিয়ার আমেরিকান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মস্কো। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই হামলার নেপথ্যে আমেরিকা-যোগ কী ভাবে খুঁজে পাচ্ছে রাশিয়া? এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত কূটনৈতিক মহলে। আসলে ক্রিমিয়ায় যে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে তা হল ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম ’। এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয় আমেরিকাতেই। যার অর্থ, ইউক্রেনকে আমেরিকাই এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিল।২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার পরই ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সামরিক দিক থেকে তো বটেই, অন্যান্য ক্ষেত্রেও সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল হোয়াইট হাউস।তবে এত দিন জেলেনস্কি সরকার মূলত রুশ হামলা প্রতিহত করছিল। যদি ইউক্রেনের জমিতে ঢুকে রুশ সেনা হামলা করে, তা হলেই পাল্টা জবাব দিচ্ছিল ইউক্রেন সেনা। রাশিয়ায় গিয়ে হামলা চালানো থেকে প্রায় বিরতই ছিল তারা।কিন্তু রবিবারের হামলার পর বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেন ‘রক্ষণাত্মক’ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। তারাও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।

রাশিয়ার মতে, আমেরিকার মদত পেয়েই ইউক্রেন এই হামলা চালিয়েছে। এর জন্য জি৭ সম্মেলনের মাঝে জেলেনস্কি-বাইডেন বৈঠককেই দায়ী করছে রুশ প্রশাসন।জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকেই যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে রাশিয়ার যে কোনও জায়গায় আমেরিকান অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে আমেরিকা। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায় বিশ্বে।রবিবারের হামলার পর আমেরিকার এই সবুজ সঙ্কেতকে কাঠগড়ায় তুলছে রাশিয়া। তাদের মতে, ক্রিমিয়ায় যে হেতু আমেরিকান ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, তাই বলাই যায় আমেরিকার ইশারাতেই ইউক্রেন হামলা করেছে।একই সঙ্গে দাগিস্তানে আততায়ী হামলার নেপথ্যেও আমেরিকা রয়েছে বলে মনে করছে রাশিয়া।

কারণ, আততায়ীদের হাতে যে বন্দুক দেখা গিয়েছিল, তা সবই আমেরিকায় তৈরি। তাই সাবাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে আততায়ীরা ওই বন্দুক পেল? কাদের মদতে এই হামলা? রাশিয়া এ ব্যাপারে তেমন প্রতিক্রিয়া না দিলেও ক্রিমিয়া হামলা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।ক্রিমিয়া নিয়ে বিরোধ নতুন নয়। আগে এই এলাকা ইউক্রেনের অংশ ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে রাশিয়া এখানে আক্রমণ করে এবং দখল করে নেয়। তার পর থেকে ক্রিমিয়া রয়েছে রুশের দখলেই।২০১৪ সালে রাশিয়াকে এই হামলার দাম চোকাতে হয়। জি৮ থেকে বার করে দেওয়া হয় পুতিনের দেশকে। সেই থেকে বিশ্বে জি৭-ই ছড়ি ঘোরাচ্ছে।সেই ক্রিমিয়ায় নতুন করে ইউক্রেনের হামলা দেখে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।