বাংলাকে বেমালুম বাদ দিয়ে বাংলারই উপর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা জল চুক্তি পুণর্নবিকরণ করতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। বাংলাদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে দাঁড় করিয়ে ঘটা করে সেই বার্তা দেওয়ার পরই প্রতিবাদে সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চুক্তির সমস্যা ও বিভিন্ন দিকের তথ্য তুলে ধরে বাংলাকে এই চুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার আবেদন জানান তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। আর তারপরেই মিথ্যের ফানুস উড়িয়ে দিতে এতটুকু দ্বিধা করেনি কেন্দ্রের মোদি সরকার। দাবি করা হয়েছে, রাজ্যকে জানিয়েই এই চুক্তির হচ্ছে। আদতে কেন্দ্র ঠিক কীভাবে বাংলাকে টপকে জল চুক্তি করছে, তারই পর্দা ফাঁস করেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, জল বন্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ২০২৩ সালে জলশক্তি মন্ত্রক একটি ১২ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে। তাতে একজন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে রাখা হয়েছিল। গত ১১ জুন সেই কমিটি কেন্দ্রীয় জল কমিশনকে তাদের রিপোর্ট দেয়। যা জলশক্তি মন্ত্রকে জমা পড়ে। কিন্তু সেখানে দুএকটি পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি ছাড়া রাজ্যের মত নেওয়া হয়নি।
সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ১২ জন সদস্যের কমিটিতে বাংলার মাত্র একজন সদস্য থাকায় তাঁর পক্ষে সংখ্যা গরিষ্ঠতা বিচারেই নিজের বক্তব্য পেশ করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই রাজ্যের সমস্যা সম্পর্কে তাঁর মতামত ওই কমিটিতে কোনও গুরুত্বই পায়নি। এমনকি পরবর্তীতে কেন্দ্র ও রাজ্যে নীতি নির্ধারক কোনও কমিটিতেই ভারত-বাংলাদেশ জলচুক্তি নিয়ে কোনও কথা বা আলোচনা হয়নি।
২৪ জুন মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রীকে। তার আগে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর, ওই বছরেরই ২১ ফেব্রুয়ারি এবং তারও আগে ২০১৭ সালের ২৫ মে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সব চিঠিতেই জল চুক্তির কারণে রাজ্যের ভাঙনের সমস্যা থেকে কৃষিজমির সমস্যা থেকে সেচ, পানীয় জল সব সমস্যাই বারবার তুলে ধরা হয়েছিল। যদিও আজও পর্যন্ত সেসব নিয়ে কোনও আলোচনার পথেই যায়নি কেন্দ্র।