রাজ্য সরকার বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন পর্ষদের ভূমিকা নতুন করে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইঙ্গে কোনও টেন্ডার এবার আর স্থানীয়স্তরে হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার নবান্নে পুর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দিঘা – শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, দিঘা এবং হলদিয়ার উন্নয়নের জন্য এখন সেখানে পুরসভা রয়েছে, পঞ্চায়েত রয়েছে, জেলাশাসক রয়েছে। উন্নয়ন পর্ষদগুলিতে বিপুল সংখ্যক লোক ও পরিকাঠামো থাকলেও সকলে ঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। বরং সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে।
সভায় সকলের সামনে মুখ্যমন্ত্রী একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও। তিনি বলেন, “দিঘা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রয়োজন আছে কি এখন আর? ওখানে তো পুরসভাও আছে, পঞ্চায়েতও আছে, জেলাশাসকও আছেন। বিরাট বাড়ি বানিয়ে ৪০০-৫০০ লোক… কারও গা টিপছে, কারও পা টিপছে, কারও মাথা টিপছে। বড় বড় বিল্ডিং করে থাকছে, আরাম করছে। যেখানে সরকারের স্টাফ কম, সেখানে তাঁদের কাজে লাগিয়ে দাও।”
এই প্রসঙ্গে নগরোন্নয়ন দফতর ও তার সচিবের ভূমিকাও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। তিনি বলেন,“আরবান ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি, কী কাজ তাঁর? ডিপার্টমেন্টরা রাখারই দরকার কী? কতগুলি বোর্ড রেখে দিয়েছেন, ৪০০-৫০০ করে লোক রেখে দিয়েছে। গা টিপছে, না পা টিপছে?” শুধু দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদই নয়, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ নিয়েও একই মত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘হলদিয়াতেও তো পুরসভা রয়েছে। লাভ কী হল?’ একইসঙ্গে মুখ্যসচিবকে পুনরায় এই উন্নয়ন পর্ষদ গুলির প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজন না থাকলে আগামী দিনে এই উন্নয়ন পর্ষদ গুলি ভেঙে দেওয়া হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন ইঙ্গিত দেন।
পাশাপাশি কোনও টেন্ডার এবার আর স্থানীয়স্তরে হবে না বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এবার থেকে যা টেন্ডার হবে, তা রাজ্যস্তর থেকেই সিদ্ধান্ত হবে। তাঁর কথায়, “আমি লোকাল হাত থেকে টেন্ডারটা তুলে নিচ্ছি আজ থেকে। কোনও টেন্ডার আমি লোকালি করতে দেব না। সব সেন্ট্রালি হবে। তাদের হাতেই তথ্য থাকবে। কমিটি করে দিচ্ছি আমি। চিফ সেক্রেটারি, হোম সেক্রেটারি, ল্যান্ড, ফিনান্স সেক্রেটারি এবং ইরিগেশন সেক্রেটারি থাকবেন। সঙ্গে সিপি, ডিজি ও এডিজি আইনশৃঙ্খলা থাকবেন। কোনও কিছু হলে আমি তাঁদের ধরব।”
আরও পড়ুন- বাংলার Identity নষ্ট হয়ে যাচ্ছে! সরকারি জমি জবরদখল নিয়ে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর