পুনের ঘটনা কী তবে চোখ খুলে দিল মহারাষ্ট্র পুলিশের? পুরোনো একটি গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ঘুরিয়ে তদন্ত করতেই বেরিয়ে পড়ল বিরাট রহস্য। আদতে দুর্ঘটনা বলে অনুমান করা ঘটনার পিছনে দেখা গেল ৩০০ কোটি টাকার সম্পত্তি লোভ ও তার জন্য ‘সুপারি’ দিয়ে শ্বশুরকে খুন করেছেন বৌমা। আর তার সঙ্গেই সামনে এসে পড়ল নাগপুর শহরের নগর পরিকল্পনা নিয়ে দুর্নীতির পাহাড়।
২১ মে পুনের পোর্সে গাড়ি দুর্ঘটনায় দুই তরুণ-তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় মহারাষ্ট্র তথা গোটা দেশ। ঠিক তার পরেরদিনই নাগপুর শহরে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৮২ বছরের পুরুষোত্তম পুট্টেওয়ারের। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসাবে তদন্ত করে ঘাতক গাড়ির চালককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু পুনের ঘটনা নিয়ে পুলিশের উপর চাপ বাড়তেই সেই ঘটনায় একের পর এক প্রভাবশালী তত্ত্ব ও অপরাধপ্রবণতা পুলিশের সামনে চলে আসে।
এরপর নাগপুর পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা অন্যান্য সব এলাকার দুর্ঘটনার বিশদ তদন্তের মতো, পুট্টেওয়ারের মৃত্যু নিয়েও তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি-র ফুটেজ সামনে আসতেই তদন্ত নতুন মোড় নেয়। ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা মারার ঘটনায় গাড়ির চালক সার্থক বাগড়েকে জেরা করে জানা যায় সে নাগপুরের নগর পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী নির্দেশক অর্চনা পুট্টেওয়ারের পারিবারিক গাড়িচালক। ঘাতক গাড়িটি তার আগেই সেকেন্ড হ্যান্ড সে কিনেছিল।
এই ঘটনা সামনে আসতেই সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। শেষে সামনে আসে অর্চনা পুট্টেওয়ার নিজের শ্বশুর পুরুষোত্তমকে খুন করার ছক কষে ১ কোটি টাকা দিয়েছিল পরিবারের গাড়িচালক সার্থককে। সে তার দুই সহযোগী নিরজ নিমজে ও শচিন ধার্মিকের সহযোগিতায় গাড়ি চাপা দিয়ে খুনের ঘটনা ঘটায়। আর এই সবকিছুর পিছনে ছিল পুরুষোত্তমের ৩০০ কোটি টাকার সম্পত্তি। সেই সম্পত্তির লোভে ১ কোটি টাকা খুনের জন্য খরচ করতেও দুবার ভাবেননি অর্চনা। তবে অপরাধে অর্চনার এটাই হাতেখড়ি নয়। নগর পরিকল্পনা বিভাগের আধিকারিক হিসাবে এর আগে একাধিক বেআইনি কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। গাড়িচালক ও তার দুই সহযোগীর পাশাপাশি অর্চনাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।