শনিবারই শেষ হয়েছে দেশের সাত দফার লোকসভা ভোট। ফল ঘোষণা আগামী ৪ জুন। এক্সিট পোল যাই বলুক না কেন, গুরুত্বই দিচ্ছে না তৃণমূল। আর এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিকেল ৫’টায় জরুরি বৈঠক করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।রবিবার বিকেলে ভারচুয়ালি বৈঠক করেন অভিষেক। আগামী ৪ জুনের কাউন্টিং নিয়ে বৈঠক হবে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সমস্ত লোকসভার প্রার্থীরা, সমস্ত লোকসভার নির্বাচনী এজেন্টরা, সমস্ত লোকসভার ইলেকশান অবর্জাভররা , সমস্ত জেলার সভাপতিরা, সমস্ত জেলার চেয়ারম্যানরা, দলের সমস্ত বিধায়কের, তৃণমূলের সমস্ত ব্লক ও টাউন সভাপতিরা। গণনা কেন্দ্রে ভূমিকা কী হবে তা নিয়েই হয় এই বৈঠক।

যে কোনও ভোটের গণনা পর্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সাংগঠনিক ভাবে দল কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে, সেই বিষয়ে জানতেই বৈঠকে বসেন ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ। তৃণমূলের তরফেও কাউন্টিং এজেন্টদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে সম্প্রতি। সরকারি কর্মী বা ভাতা পান, এমন কাউকে গণনার কাজে রাখা যাবে না বলে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন নির্দেশিকা জারি করেছে। ফলে নতুন করে কাউন্টিং এজেন্ট খুঁজতে হচ্ছে তৃণমূলকে।

এদিনের বৈঠকে অভিষেক নির্দেশ দেন, গণনার টেবিলে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। ভোট গণনা নিয়ে দলের এজেন্টদের কী করতে হবে তা আরও ভাল করে বুঝিয়ে বলেন অভিষেক। একইসঙ্গে সোমবার ভোট গণনার আগের দিন জেলায় জেলায় নির্দিষ্ট জায়গায় একদফা প্রশিক্ষণের কথাও বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যাঁরা গণনার টেবিলে দলের এজেন্ট হিসেবে বসবেন তাঁদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় সেদিকেও নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। বৈঠকে একজিট পোল নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা নিয়ে ভাবার কোনও কারণ নেই। ম্যানিপুলেটেড একজিট পোল। এগুলি করানো হয়েছে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দৃপ্ত কণ্ঠে সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, ২০১৯-এর থেকে এবারে তৃণমূলের ফল আরও ভাল হবে। আসন ও ভোট শতাংশ দুই-ই বাড়বে। ২০২১-এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ওই বিধানসভা নির্বাচনেও মিডিয়া বিজেপিকে জিতিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ তা হতে দেননি। এবারও বাংলার মানুষ তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছেন।

ফলে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে। গোটা প্রচারপর্বে অভিষেক যা দেখেছেন তাঁর যা উপলব্ধি তা তুলে ধরেছেন। আগামী মঙ্গলবার বাংলা-সহ ভারতবর্ষের মতামত জানা যাবে ইভিএম খুললেই। কিন্তু যেভাবে মিডিয়ার একাংশকে ব্যবহার করে গণনার আগে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও পোলিং এজেন্টদের উপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি এদিন সকালেই তার তীব্র সমালোচনা করেছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকও দলকে এসবে অযথা কান দিতে বারণ করেছেন। কারণ, বিজেপির কৌশলই হচ্ছে বিরোধীদের চাপে ফেলে বিভ্রান্ত করে দেওয়া। ফলে এই মুহূর্তে নার্ভ ধরে রেখে শক্ত হাতে গোটা বিষয়টি সামলাতে হবে। সুষ্ঠুভাবে গণনাপর্ব মেটাতে হবে। কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। মাথা ঠান্ডা রেখে, চোখ-কান খোলা রেখে চলতে হবে। দু’মাসেরও বেশি এই ভোট পর্বের শেষে গণনাকে ঘিরে এখন টানটান উত্তেজনা থাকাটা স্বাভাবিক। সেকথা মাথায় রেখেই দলের নেতা-কর্মীদের বারেবারে সতর্ক করছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির কৌশল ভেস্তে দিতেই এই বৈঠকে অভিষেক আরও বেশি করে সকলকে গণনায় ফোকাস করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন- ফের ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সন্দেশখালিতে, নামল র্যাফ: গ্রেফতার ১১






































































































































