হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। ইতিমধ্যে ভোটের আবহে শুরু হয়ে গিয়েছে জামাইকে বরণ করার প্রস্তুতি। কীভাবে জামাইয়ের প্লেটে বাজারের সবচেয়ে ভালো জিনিসটা তুলে দেওয়া যায় তা নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের চিন্তা কিছুতেই পিছু ছাড়তে চায় না। কিন্তু সেই ভাবনায় কিছুটা হলেও জল ঢালল (Mangoes) আমের ফলন। জামাই ষষ্ঠী (Jamai Sasthi) মানে একাধিক খাবারের সঙ্গে আমের ভূমিকাও সমানভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্লেটে অন্য ফল থাকলেও আমের জুড়ি মেলা ভার। আর এমন আবহেই কাটল তাল। সূত্রের খবর, চলতি মরসুমে আমের ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে মধ্যবিত্তদের। একে তো ফলন ভালো হয়নি, তার উপরে আমের দাম মাত্রাছাড়া হওয়ায় কপালে হাত মধ্যবিত্তদের। কিন্তু দাম যতই হোক জামাইয়েরে পাতে কী আম না দিলে চলে? কিন্তু তার গায়ে হাত দিতে গেলেই ছ্যাকা লাগছে বলে মত হুগলিবাসীর (Hoogly)।


তবে আমের কথা বললে প্রথমেই মাথায় আসে মালদহের কথা। তবে, পিছিয়ে নেই হুগলি জেলাও। স্বাদ-গন্ধে ভরপুর ফলের রাজা উৎপাদন করে মালদহের সঙ্গে জোর টক্কর দেন হুগলির চাষিরাও। তবে এবছরের ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় মাথায় হাত চাষিদের। মালদহের পর বেশি আম চাষ হয় এ রাজ্যের হুগলিতে। ব্যান্ডেল, সুগন্ধা, চুঁচুড়া, গটু-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আমের বাগান রয়েছে। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে আমের ফলন খুব একটা ভালো হয়নি। প্রতিবছর বাগান মালিকদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে আম চাষ করেন চাষিরা। ল্যাংড়া, হিমসাগর, বোম্বাই সহ বিভিন্ন প্রজাতির আম খেতে সুস্বাদু। আর সে কারণেই প্রতিবছর হুগলি থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ চেন্নাই, দিল্লি সহ অন্যান্য রাজ্যে পাড়ি দেয় হুগলির আম। তবে এবছর আমের ফলন কম হওয়ায় চাহিদা থাকলেও অন্যান্য রাজ্যে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।


আম চাষিদের মতে, আমের মুকুল আসার সময় বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তীব্র গরমে অসময়ে ঝরে পড়েছে আমের মুকুল। তার উপর বেড়েছে গাছে স্প্রে করা ওষুধ ও শ্রমিকের খরচ। তার উপর অধিকাংশ চাষি যারা বাগান লিজ নিয়ে চাষ করেছেন তাঁদের মতে এবছর লাভের মুখ দেখা কঠিন। সামনেই রয়েছে জামাইষষ্ঠী। তার আগে জামাইদের পাতে আম দিয়ে আপ্যায়ন করাটাই শাশুড়িদের কাছে অনেকটাই খরচ সাপেক্ষ। হুগলির আম চাষি অমল দাস বলেন, প্রতিবারই বাগান লিজ নিয়ে চাষ করতে হয়। এবছর আমের যা ফলন তাতে চাষিরা যে টাকা খরচ করেছে সেই টাকা উঠবে না। তিনি আরও জানান, আমের মুকুল আসার পর গাছে তিনবার স্প্রে করতে হয়। নতুন বোল আসার সময় আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য মুকুল ঝরে গিয়েছে। তার উপর গাছে স্প্রে করার ওষুধের দামও অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছে, বেড়েছে শ্রমিকের খরচও। অন্যদিকে ব্যবসায়ী সৌমেন দাস, জানান, গত বছরের তুলনায় আবহাওয়ার জন্য এ বছরে ফলন অনেক কম। যাঁরা বাগান নিয়ে চাষ করেছে, তাঁদের অনেকের গাছে ভালো ফলন হয়নি।
হুগলিতে গাছপাকা হিমসাগর পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৮০- ৮৫ টাকা প্রতি কেজি। গটু বাজারে অন্যান্য বছর ১০০ টা গাড়ি লোড করা হয়, কিন্তু এ বছর ৮ থেকে ১০ টা করে গাড়ি লোড করা হচ্ছে। মাত্র ৮ থেকে ১০ টন করে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে এ রাজ্যের আম। পাশাপাশি যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ক্রেতাদের মতে আমাদের হুগলি জেলায় আম খুব সস্তা পাওয়া যেতো কিন্তু এবারে দেখছি দামট অনেক বেশি। আমের এই সময়ে প্রত্যেকদিনই বাড়িতে আম খাওয়া হয় কিন্তু এবার দামের কথাটাও চিন্তা করতে হচ্ছে। কিন্তু জামাইষষ্ঠীর দিন তো আর দামের কথা ভাবলে হবেনা সেদিন নিতেই হবে।










































































































































