খোলা চিঠিতে নরেন্দ্র মোদির নিন্দা! লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার আগে মুখ খুললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মোদিই দেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি পদ ও চেয়ারের মর্যাদাকে মাটিতে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন’। লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের আগে দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে লেখা ওই খোলা চিঠিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, আমি এই নির্বাচনী প্রচারের সময় রাজনৈতিক আলোচনাগুলিকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছি। মোদীজি জঘন্য ‘ঘৃণামূলক’ বক্তৃতা দিয়েছেন, যার মধ্যে বিভাজনের রাজনীতির ছাপ স্পষ্ট। মোদীজি হলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি তাঁর পদমর্যাদা হ্রাস করেছেন এবং এর সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের গম্ভীরতাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। সমাজের কোন বিশেষ শ্রেণী বা বিরোধী দলকে টার্গেট করার জন্য পূর্ববর্তী কোন প্রধানমন্ত্রী এমন নোংরা, অসংসদীয় ও নিম্নরুচির ভাষা ব্যবহার করেননি। মোদি আমার বক্তব্যকে নিয়েও দেশবাসীর কাছে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমি আমার জীবনে কখনওই এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা করিনি। এটা বিজেপির বিশেষ অভ্যাস এবং এজেন্ডা।
কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে মনমোহন লিখেছেন,পাঞ্জাবে ৭৫০ জন চাষির মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখে সে প্রসঙ্গে কোনও কথা শোনা যায়নি। অথচ আন্দোলনকারীদের তিনি পরজীবী বলে কটাক্ষ করেছেন। মনমোহনের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে ৩০ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। কিন্তু ১০ বছরে মোদি সরকার তা পূরণ করেনি। উল্টে সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী নিয়োগ করেছে। যা থেকে বিজেপির জাতীয়তাবাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।
খোলা চিঠিতে সেনাবাহিনীতে পাঞ্জাবের ভূমিকার ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবের ভোটারদের কাছে ভালবাসা, শান্তি, ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। পাঞ্জাবিদের উচিত উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির পক্ষে ভোট দেওয়া। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে শুধুমাত্র কংগ্রেসই একটি উন্নয়নমুখী প্রগতিশীল ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারে, যেখানে গণতন্ত্র এবং সংবিধান সুরক্ষিত থাকবে।
বিরাজমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ দেশের অর্থনীতি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, গত দশ বছরে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক উত্থান-পতন ঘটেছে। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন নোটবন্দিকরণ, জিএসটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিজেপি সরকারের অধীনে বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যেখানে ইউপিএ সরকারের সময় এটি ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।
মোদি জমানায় সামগ্রিক ভাবে গৃহস্থের সঞ্চয় এবং আমজনতার ক্রয় ক্ষমতাও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে দাবি করেছেন মনমোহন। সার্বিক ভাবে এই ১০ বছরে সব দিক থেকেই ভারত নিম্নগামী হয়েছে বলে দাবি করেছেন মনমোহন।









































































































































