রাজপথে জনসমুদ্র। তার মধ্যে দিয়েই বাঁধভাঙা আবেগে ভেসে ১২ কিলোমিটার হাঁটলেন তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। শেষলগ্নের প্রচারে লক্ষ্মীবারের দুপুরে এমনই ঐতিহাসিক পদযাত্রার সাক্ষী থাকল কলকাতা। যাদবপুর থেকে আলিপুর- ১২ কিলোমিটারেরও বেশি পথ তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে হেঁটে মানুষ বুঝিয়ে দিল বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। ঠিক দু’মাস আগে ৩১ মার্চ কৃষ্ণনগরে সভা করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সোজা চলে গিয়েছিলেন উত্তরে। বাংলা জুড়ে একশোরও বেশি সভা ও রোড-শোয়ের পর বৃহস্পতিবার তৃণমূলের আঁতুড়ঘর দক্ষিণ কলকাতার রাজপথে ফিরলেন দলনেত্রী।




যাদবপুরের সুলেখা মোড় থেকে আলিপুরের গোপালনগর পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে বিরাট মিছিল করে নির্বাচনী প্রচার শেষ করলেন মমতা। অস্বস্তিকর গরমে যেখানে কয়েকশো মিটার হাঁটতেই ঘেমে নেয়ে একশা হতে হয়, সেই দীর্ঘ পথে কার্যত দাপিয়ে বেড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুরের প্রার্থী সায়নী ঘোষ (Saoni Ghosh) ও কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী মালা রায়ের (Mala Ray) সমর্থনে প্রচার পর্বের শেষদিনে ঐতিহাসিক মেগা পদযাত্রা করলেন মমতা। সাম্প্রতিক অতীতে শুধু কলকাতা শহরই নয়, এমন পদযাত্রা গোটা রাজ্য দেখেনি। রংবেরঙের বেলুন সঙ্গে ব্যানার-ফেস্টুন, কোথাও আদিবাসী নৃত্য, কোথাও আবার ধামসা-মাদল। প্রচার মিছিল রূপ নিল প্রায় বিজয় মিছিলে।




এদিন দুপুর ২টোর কিছু পরেই দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের নিয়ে মিছিল শুরু করেন মমতা। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, মনীশ গুপ্ত, প্রিয়দর্শিনী হাকিম-সহ দক্ষিণ কলকাতার একাধিক নেতৃত্ব। যাদবপুর থেকে গোলপার্ক-গড়িয়াহাট-বালিগঞ্জ ফাঁড়ি হয়ে পদ্মপুকুরের মধ্যে দিয়ে হরিশ মুখার্জী রোড হয়ে মিছিল পৌঁছয় কালীঘাট, সেখান থেকে ব্রিজ পেরিয়ে আলিপুরের গোপালনগর মোড়ে। সেই চেনা রুট আর জননেত্রীর সেই চেনা ছন্দ।

এই বিরাট ঐতিহাসিক মিছিলকে ঘিরে এদিন রীতিমতো উৎসবের মেজাজ দক্ষিণ কলকাতায়। ধর্ম-বর্ণ-জাতি-বয়স নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের আবেগ-উচ্ছ্বাস-উন্মাদনা ফেটে পড়ল রাস্তার দু’ধারে। নেত্রীকে একবার কাছ থেকে দেখতে, মোবাইলে তাঁকে দেখার মুহূর্তবন্দি করতে উপচে পড়ল আট থেকে আশির ভিড়। দীর্ঘ পথের বিভিন্ন জায়গায় নাচে-গানে নেত্রীকে স্বাগত জানাল সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মানুষ। আঁটসাঁট নিরাপত্তার গণ্ডি টপকে নেত্রীর সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করলেন মমতা-ম্যাজিকে উদ্বেলিত মানুষ। নেত্রীও মানুষের এই ভালবাসা মাথা পেতে নিলেন। ছোটদের থেকে দু’হাত ভরে নিলেন ভালবাসার উপহার। আর বয়োজ্যেষ্ঠদের থেকে নিলেন আশীর্বাদ। তৃণমূলের আঁতুড়ঘর দক্ষিণ কলকাতায় মানুষের বাঁধভাঙা ভালবাসা আর জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক মিছিল তিরিশে মে দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখল।










































































































































