বিধায়ক হয়েও তৃণমূল সভানেত্রীর প্রচারসভায় না যাওয়ায় তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েন ঊষারানি মণ্ডল (Usharani Mondal) ও তাঁর স্বামী প্রাক্তন বিধায়ক তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল (Mrityunjay Mondal)। কেন যাননি তাঁরা? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অভিযোগ করেন বিজেপি (BJP) সঙ্গে গোপন আঁতাঁতের ফলেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন মণ্ডল দম্পতি। তবে, বিশ্ববাংলা সংবাদকে মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল জানালেন, কারও সঙ্গে যোগাযোগ নয়, দলের মধ্যেই অপমানিত হতে হচ্ছিল। সেদিন সভায় গেলেও অপমানিত হতে হত- এই ভয়েই যাননি তাঁরা। তবে, সোমবার, কালীঘাটে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সঙ্গে কথা বলে অভিমানের বরফ গলেছে বলে জানান মৃত্যুঞ্জয়। তাঁর, কথায় অভিষেক তাঁদের কথা শুনেছেন। পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকেই দলীয় প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের হয়ে এলাকায় প্রচার শুরু করেছেন মণ্ডল দম্পতি।শনিবার হাড়োয়ায় বসিরহাটের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারসভা থেকে তৃণমূল সভানেত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “তৃণমূলের এমএলএ থাকবেন, কিন্তু মিটিংয়ে আসবেন না, তা চলবে না! যত ক্ষণ না ক্ষমা চেয়ে পায়ে ধরবে, তত ক্ষণ ঊষারানি মণ্ডলকে আমরা মানি না! মানি না! মানি না! ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আপনাদের মতো লোক চাই না! আপনি স্বামীকে নিয়ে দলটাকে বেচে দেবেন? এটা মানব না!“ এর প্রেক্ষিতে ঊষারানির স্বামী জানান, তিনি ১৯৯৮ থেকে তৃণমূল করেন। নিজে মিনাখাঁর বিধায়ক ছিলেন। কিন্তু ২০০৬-এ জোড়া খুনে তাঁর নাম জড়ানো স্ত্রী ঊষারানিকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনবারের বিধায়ক তিনি। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের অভিযোগ, দলের মধ্যে তাঁরা দুজনেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন। বারবার অপমানিত হতে হয়। সেই কারণেই অভিমানে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন। অপমানিত হওয়ার ভয়েই সেদিন সভায় যাননি বলেও দাবি মৃত্যুঞ্জয়ের।
তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিজেপি-যোগের অভিযোগ উঠল কেন?
মৃত্যুঞ্জয়ের দাবি, দলের কিছুই লোকই নাকি এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেদিন সভায় না যাওয়া দলনেত্রী রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু কেন যাননি সেই ব্যাখ্যাই সোমবার অভিষেককে দিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাঁদের কথা শুনেছেন বলে জানান মৃত্যুঞ্জয় (Mrityunjay Mondal)। ভোটের পরে এই বিষয়ে তিনি পদক্ষেপ করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন অভিষেক- দাবি ঊষারানির স্বামীর। অভিষেকের সঙ্গে কথা বলে অভিমান গলে জল মণ্ডল দম্পতির। মঙ্গলবার, থেকেই তাঁরা হাজি নুরুলের হয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন। তবে, প্রশ্ন উঠছে, কেন এতদিন পরে বলেছেন তাঁরা? এই কথা তো আগেও জানাতে পারতেন। না কি বিজেপি-যোগ প্রকাশ্যে আসতেই পদ বাঁচাতে তাঁরা অপমানের অজুহাত তুলছেন? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।