ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে রেমাল! দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত চুঁচুড়া পুরসভা

0
4

ক্রমশ স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ (Remal)। এই মুহূর্তে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে রবিবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে রবিবার দুপুরের পর থেকে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা বঙ্গে। সেই মতোই লাগাতার প্রচার শুরু প্রশাসনের। শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য চলছে মাইকিং। এদিন হুগলি (Hoogly) চুঁচুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় চলছে মাইকিং। ইতিমধ্যে পুরসভার পক্ষ থেকে বাঁধের পাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সমুদ্রে যাওয়া মাঝিদের ইতিমধ্যে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে শনিবার ২৫ মে থেকে আগামী সোমবার ২৭ মে অবধি তিন দিন জেলার সমস্ত ঘাটে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে নবান্নের তরফে। এদিন সকালে দেখা যায় চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, গুপ্তিপাড়া-সহ একাধিক ফেরী ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক ফেরীঘাটের কাউন্টারে। তবে বহু যাত্রীর কাছে ফেরি বন্ধের খবর না থাকায় ঘাটে এসে অনেককেই ফিরে যেতে হচ্ছে বলে খবর। এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, ইয়াস ও আম্ফানের সময় প্রশাসন মানুষের পাশে থেকেছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর রেমাল পশ্চিমবঙ্গের সাগর উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে। ইতিমধ্যে এই নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে এবং নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

অন্যদিকে রিমেল ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমবায় সমিতি। সংস্থার চেয়ারম্যান বাপি মান্না জানান, রবি ও সোমবার দুদিন সমস্ত ঘাটেই ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকবে। গাদিয়াড়া থেকে হাওড়ার মধ্যে বিভিন্ন ফেরিঘাট থেকে আমাদের প্রায় ২৫টি লঞ্চ চলাচল করে। আমরা সবগুলিই বন্ধ রাখছি। এর পাশাপাশি নিরাপত্তার কারণে বিভিন্ন ফেরিঘাটে লঞ্চগুলিকে জেটির সঙ্গে মোটা নাইলনের দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মাইকিং করে প্রতিটি ঘাটে যাত্রীদের সতর্ক করার কাজও চলছে। সব ঘাটেই নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে রবি ও সোমবার ফেরি বন্ধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাওড়ার নদী তীরবর্তী শ্যামপুর-১ নম্বর ব্লকের বাসুদেবপুর, নবগ্রাম, শিবগঞ্জ এবং গাদিয়াড়া এলাকায় মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা এলাকায় টহল দিচ্ছেন। প্রয়োজনে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক স্কুলবাড়ি তৈরি রাখা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত পানীয় জলের প্যাকেট ও শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। হাওড়া পুরসভার তরফে ইতিমধ্যেই সবসময়ের জন্য তিনদিনের বিশেষ কণ্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। জেলাশাসক জানান, যে কোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা তৈরি। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিকাশি, সেচ দফতর সহ জরুরি বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর সবসময় কড়া নজর রাখা হচ্ছে।