বসিরহাটে প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের প্রচারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতেই সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টানলেন। বললেন, সন্দেশখালির মা বোনেদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তার জন্য হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখিত। সন্দেশখালির মা বোনেদের যেভাবে অপমান করা হয়েছে তার জন্য আমি দুঃখিত। মা-বোনেদের নিয়ে যেন অসম্মানের খেলা কেউ না খেলে। ভোটের আগে বিজেপির প্ল্যানে ছিল সন্দেশখালিতে ঝামেলা লাগানো, মা-বোনেরাই তা রুখে দিয়েছে। সন্দেশখালি সত্য কথা প্রকাশ পেয়েছে।
মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন,বিজেপির আমলে ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশি মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। দলিতদের উপর দেদার অত্যাচার হয়েছে। এসব আমাদের এখানে হয় না। আমাদের এখানে যে দু’-একটা ঘটনা হয়, আমরা দ্রুত তার ব্যবস্থা নিই। রাম হোক বা রহিম, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কাউকে ছা়ড়া হয় না।
এদিন মমতা বলেন, আমরা সুন্দরবন নিয়ে নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছি, আপনাদের জেলা নতুন জেলা হবে। বসিরহাটের বেশির ভাগ অঞ্চলগুলি নিয়ে একটা জেলা হবে। এরই সঙ্গে বকখালি সাগরদ্বীপ নিয়ে আরও একটা জেলা হবে। এরই পাশাপাশি ভেড়ি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভেড়ি নিয়ে একটা পলিসি তৈরি করছি। জোর করে ভেড়ি কেড়ে নেওয়া যাবে না। যার ভেড়ি সে চাষ করবে। না হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি চালাক। কিন্তু সরকারের খাতায় নাম নথিভুক্ত করতে হবে। সরকারকেও তার জন্য একটা শুল্ক দিতে হবে।
এদিন প্রথম থেকেই মমতার নিশানায় ছিল বিজেপি। তার সাফ কথা, মা বোনেদের সম্মান নিয়ে যাতে কেউ আর না খেলে সেদিকে নজর রাখতে হবে। সন্দেশখালির ঘটনা সামনে না এলে কেউ বুঝতেই পারত না বিজেপি কী চক্রান্ত করেছিল।ভোটের আগে চক্রান্ত করার জন্য কারোকে ২ হাজার আবার কারোকে ৫ হাজার দিয়ে লিখিয়ে নিচ্ছে ওরা। পার্টি অফিস থেকে কোটি কোটি টাকা বের হচ্ছে। আর যে সেটা ধরল, তাকেই নির্বাচন কমিশন সাসপেন্ড করে দিল। বিজেপির প্ল্যান বি, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি। সেটা এখনও চলছে। হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগি করবেন না। দাঙ্গা যাতে না লাগে এলাকা যাতে শান্ত থাকে সেই আবেদন জানাচ্ছি।
মমতা বলেন, আমরা ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগিয়েছি, যাতে নদীর পাড় গুলো শক্তপোক্ত হয়। আমরা ছাত্রছাত্রীদের স্মার্টফোন, সাইকেল, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দিয়েছি। বিনা পয়সায় রেশন দেওয়ার কথা বলেছিলাম দিয়েছি।
বিজেপিকে তোপ দেগে বলেন, বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি। তৃণমূল কথা দিলে কথা রাখে। বিজেপি ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় না, আবাসের টাকা দেয় না। আমরা সেই টাকার ব্যবস্থা করেছি। আবাস-রাস্তা-জলের টাকা আটকে রেখেছে ।আগামী দেড় বছরের মধ্যে সবার বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে যাবে। বিজেপির কাজ হল মিথ্যে কথা বলা। গরীবের টাকাকে বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করে।আসলে টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চায় বিজেপি ।বিজেপির গ্যারান্টি শুধু ফোর টুয়েন্টি।
বাংলায় এনআরসি, সিএএ করতে দেবো না। এবার ৪০০ পার নয় পগারপার । বিজেপি এলে সংবিধান নষ্ট হয়ে যাবে।গোটা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে বিজেপি।যেটা আমি বুঝি না, আপনি বোঝেন না, সেটা দেশ বোঝে।