দিন কয়েক আগেই কোভিড ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের (Covishield) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো দেশজুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। কোভিশিল্ডের পর এবার কোভ্যাকসিনের (Covaxin) বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর অভিযোগ। ভারত বায়োটেক নির্মিত কোভ্যাকসিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এবার এই বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গবেষকরা স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিকে AESI বলে অভিহিত করেছেন। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কোভ্যাক্সিনেরও যথেষ্ট ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি প্রতিষেধক এজেডডি১২২২-র ভারতে যা কোভিশিল্ড নামেই পরিচিত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, এই টিকা নিয়ে বহু মানুষের ক্ষতি হয়েছে, এমনকি প্রাণহানিও ঘটেছে। যার জেরে একাধিক মামলাও হয়। এরপরেই প্রতিষেধকটি বাজার থেকে তুলে নিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এবার কোভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠল। গবেষকদের দাবি, কোভ্যাকসিন টিকা গ্রহণকারীদের প্রতি তিন জনের মধ্যে একজনের শরীরে কোনও না কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। গবেষকরা ৬৩৫ জন কিশোর ও ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্কদের উপর টানা এক বছর ধরে নজরদারি চালিয়েছিলেন। গবেষণা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে মোট ৯২৬ জনের মধ্যে ৫০ শতাংশের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে।এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘অ্যাডভার্স ইভেন্ট অব স্পেশাল ইন্টারেস্ট’ (ASI) বলা হয়। এ ছাড়াও মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাবজনিত নানা জটিলতা দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি ৯২৬ জনের মধ্যে ৫০ শতাংশের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
গবেষকরা আরও দাবি করেছেন, কোভ্যাকসিন নেওয়ার পর ৪.৬ শতাংশ মেয়ের ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। এদের প্রত্যেকেরই ডায়াবেটিস ও তিনজনের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। ২.৭% অংশগ্রহণকারীদের চোখ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা গেছে এবং ০.৬% এর মধ্যে থাইরয়েডের ঘাটতি পাওয়া গেছে। এছাড়াও গবেষকেরা জানিয়েছেন, সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৬৩৫ জন নাবালক এবং ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক। ২০২২ থেকে ২০২৩-এর অগস্ট মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা করা হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৩০৪ জন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছে এমন কিশোর-কিশোরী (৪৭.৯ শতাংশ) এবং ১২৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক (৪২.৬ শতাংশ) শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন।