বিকাশ বোস, ভিকি যাদব, গোপাল মজুমদার, স্বপন চক্রবর্তী, সঞ্জয় সিং সহ একের পর এক খুন হওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামের তালিকা। খুলির স্তূপ, কঙ্কালের উপর বসে আছেন বাহুবলী অর্জুন সিং! নীচে লেখা “নো ভোট টু মার্ডারার”! এমনই সব পোস্টারে ছয়লাপ ব্যারাকপুর লোকসভার বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
আগামী ২০ মে পঞ্চম দফায় রাজ্যের যে সাত লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, তার মধ্যে বিশেষ নজরে থাকছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর কেন্দ্রটি। এই আসনটি প্রেস্টিজ ফাইট বিজেপি আর তৃণমূলের। বিজেপি এখানে ফের প্রার্থী করেছে একাধিকবার দলবদলু “পাল্টিবাজ-পল্টুরাম” বাহুবলী অর্জুন সিংকে। অন্যদিকে, তৃণমূলের প্রার্থী স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নিপাট ভদ্রলোক বলে পরিচিত রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। পার্থর লক্ষ্য কৃষ্টি-সংস্কৃতির ব্যারাকপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠা। যা বেশ কয়েক দশক ধরে অর্জুন সিংদের হাতে নষ্ট হয়েছে।
এদিকে ভোটের ঠিক আগেই পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়ে ব্যারাকপুর জুড়ে। পোস্টারে অর্জুন সিংয়ের ছবি, যেখানে বাহুবলী নেতাকে দেখা যাচ্ছে খুলি,কঙ্কালের উপর হাসি মুখে বসে রয়েছে। গেরুয়া উত্তরীয়তে একদিকে লেখা ‘অর্জুন সিং’ আর অন্যদিকে, ‘পল্টু সিং’! ছবির ঠিক নিচে লেখা “নো ভোট টু মার্ডারার”। ছবিতে উপরে ‘মার্ডারড’ অর্থাৎ খুন হয়েছেন – এই তালিকায় ১১ জনের নাম লেখা। তার পর ‘অ্যাটেম্পট টু মার্ডার’ অর্থাৎ খুনের চেষ্টা হয়েছে ধরমেন্দ্র সিংহ, গৌরব পণ্ডিত, নুরই জামাল সহ আরও কয়েক জনের নাম। শিরোনামে আরও কয়েকটি নাম। অর্জুন সিংয়ের ছবির নিচে লেখা – ‘নো ভোট টু মার্ডারার’, খুনিকে একটি ভোটও নয়। তার নিচে বাংলায় লেখা – ‘এদের হত্যার গণতান্ত্রিক বিচার চাই।’ এখানেই শেষ নয়, মানুষের বাড়িতে আসা রোজ সকালে খবরের কাগজের ভাঁজের মধ্যেও লিফলেট আকারে এই একই ছবি।
কিন্তু কে বা কার এই পোস্টার দিল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলই এই পোস্টারের দায় নেয়নি। তবে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের দাবি, তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক, ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীরা এই ঘটনার পিছনে রয়েছেন। যদিও অর্জুনের দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে তৃণমূল।
অর্জুনের কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের স্পষ্ট দাবি, ”উনি (অর্জুন সিং) তো খুনিই, সাইকো কিলার। রক্ত নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন। খুনিকে খুনি বললে আপত্তি কোথায়? বারাকপুরের সবাই তা জানেন। তাই তাঁরাই এসব পোস্টার ছড়িয়ে মানুষকে সাবধান করছেন। তৃণমূল এসব করেনি।”