লোকসভা ভোটের আগেই গেরুয়া শিবিরের ইলেক্টরাল বন্ড নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। ওই বন্ডে সবচেয়ে বেশি টাকা গিয়েছে বিজেপির (BJP) ফান্ডে। আর এই বিষয় নিয়ে এদিন বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rachana Banerjee) সমর্থনে ধনেখালির সভা থেকে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, “ভারতবর্ষে যাঁরা গরুর মাংস কেটে, বিদেশে রফতানি করে, সেই সংস্থাগুলির থেকে ইলেক্টরাল বন্ডে সব থেকে বেশি চাঁদা নিয়েছে বিজেপি। এটা আমি বললাম। ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক।“
হুগলির সভা থেকে বিদায়ী সাংসদ বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, “এই লকেট চ্যাটার্জি ২০১৯ সাল জিতিয়ে ছিলেন তাই, আপনাদের আবাসের, ১০০ দিনের টাকা বন্ধ। এ বার যদি লকেটকে ভোট দিয়ে জেতান তবে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেবে।“ পাশাপাশি অভিষেকের বিস্ফোরক অভিযোগ “ভারতবর্ষে যাঁরা গরুর মাংস কেটে, বিদেশে রফতানি করে, সেই সংস্থাগুলির থেকে ইলেক্টরাল বন্ডে সব থেকে বেশি চাঁদা নিয়েছে বিজেপি। এটা আমি বললাম। ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক।“
এদিন জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, ভোট দিতে যাওয়ার আগে মাথায় রাখবেন জনবিরোধী, বাংলাবিরোধী গিজেপি সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। ৪ জুন ভারতে বুকে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা হতে চলেছে। “আপনাদের ভোট ঐতিহাসিক ২০ মে। যে ২০ তারিখ ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে প্রথম বার বাংলার মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন। আর এই ২০ তারিখ আপনারা ভোট দিতে যাবেন, তখন আপনারা খালি বিজেপির অত্যাচারের কথা মাথায় রেখে দেবেন।
আমাদের শপথ নিতে হবে যাঁরা ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে, যাঁরা কালো কৃষি আইন এনে ৭০০ কৃষককে অত্যাচার করেছে, তাঁদেরকে যোগ্য জবাব দিতে হবে ২০ তারিখ।“
অভিষেক বলেন, “আগামী দিন আমাদের প্রার্থী যদি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ব্যবধানে জেতে, তা হলে আমরা ৫০ কোটি টাকার গ্রামীণ রাস্তার কাজ তিন মাসের মধ্যে শুরু করে দেব।“ কারণ, দিল্লিতে ইন্ডিয়ার সরকার, হুগলিতে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর রাজ্যে ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর হুগলির উন্নয়নের ভার নিজের কাঁধে নিচ্ছেন অভিষেক। সঙ্গে রয়েছএন তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র। অভিষেকে কথায়, আপনাদের অধিকার কেউ কাড়তে পারবে না।
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, মোদি সরকার জিতলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করে পুরো সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দেওযার চেষ্টা করবে। তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি। সন্দেশখালি নিয়ে কী ভাবে বাংলার মানসম্মান নষ্ট করেছে? বিজেপি নেতাই বলছেন, সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণ হয়নি। আমরা মহিলাদের ২ হাজার টাকা দিয়ে ভুয়ো অভিযোগ করিয়েছি, তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করানোর জন্য। সারা দেশের কাছে বাংলার সম্মান নষ্ট করেছে।“ এই প্রসঙ্গে উত্তর প্রদেশের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, পনেরো বছরে একটি ছোট্ট মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার সময় অপহরণ করে অচৈতন্য করে ধর্ষণ করা হয়েছে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে। রাজ্যপালেরও নিশানা করেন অভিষেক। রাজভবনে কর্মীর শ্লীলতাহানি, দিল্লিতে হোটেলে নৃত্যশিল্পীকে যৌন হেনস্থা- রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক অভিযোগ নিয়ে এদিন সরব হন অভিষেক। তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, রামের নামে ভোট চেয়ে রাবণকে (রাবান্না) সংসদে পাঠাতে চাইছে বিজেপি।