তমলুকে তৃণমূল প্রার্থী যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার, সেখানে প্রচারে গিয়ে নাম না করে একতিরে শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari) ও শুভেন্দু অধিকারীকে (Shubhendu Adhikari) ধুয়ে দিলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নন্দীগ্রাম আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতার বিস্ফোরক অভিযোগ, আমার লড়াইয়ের সময় পিতা-পুত্র ১০ দিন ধরে কেউ বেরোয়নি!

বৃহস্পতিবার, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয় ও দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে প্রচার করেন দলনেত্রী। প্রথমসভা দাঁতনের পরে তমলুকে দ্বিতীয়সভা থেকে শুধু বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীই নন, তাঁর বাবা শিশিরের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মমতা। একের পর তিরে নিশানা করেন দুজনকে। বলেন, ”নন্দীগ্রামে যখন গিয়েছিলাম, সেদিন ওই পিতা-পুত্র কেউ ছিল না। কেউ আসেনি। নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণা করেই চলেছেন মমতা। বললেন, সারারাত বোমা-গুলির আওয়াজ শুনেছিলাম। তখনও কিন্তু কেউ আসেননি। চিত্ত মাইতি আমাকে থাকতে দিয়েছিল।”

সেইসব আগুন ধরা দিনের কথা স্মরণ করান তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, ”নন্দীগ্রামে যখন গুলি চলেছিল, সিপিএমের গুণ্ডারা মদ খেয়ে কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল। আমার গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারার চক্রান্ত হয়েছিল। আনিসুরকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। আনিসুর পাঁশকুড়ার ছেলে। যে এখন জেলে আছে এখানকার গদ্দারটার জন্য। সেদিন যখন কেউ ছিল না, আনিসুরকে বলেছিলাম, আমাকে পৌঁছতে দেবে না, কী করে পৌঁছই বলতো! সেদিন আনিসুরের বাইকে তমলুক পর্যন্ত এসেছিলাম।”
নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে তৃণমূল সভানেত্রী যে বই লিখেছিলেন, তাতে শিশির-শুভেন্দু কথা আছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, ”হ্যাঁ, আমি ওদের কথা বইয়ে লিখেছিলাম। তখন দলে ছিল। নিজেদের লোকের নাম করব না? তাই লিখেছিলাম। এখন সংশোধন করে দেব। কারণ আমি ১০ দিন ওখানে পড়েছিলাম। পিতা-পুত্র কেউ বাইরে বেরোয়নি। কোথাও ছিল না।’’
সভামঞ্চ থেকে নাম না করে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, ’’কংগ্রেস যখন করতাম, ও তিন বার দাঁড়িয়েছে, প্রতিবার আমি এসেছি। ও গোহারা হেরেছে।’’ একই সঙ্গে শিশির অধিকারী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরে, শপথগ্রহণে যাননি ক্ষুব্ধ শুভেন্দু- সেই প্রসঙ্গ তুলে মোক্ষম খোঁচা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা মন্ত্রী হবে বলে ওর গুস্সা হয়েছিল। বাবা মন্ত্রীর শপথ নিলেও তাই ও সেখানে যায়নি। এঁদের কাছ থেকে শিক্ষা নেব?’’
অধিকারী পরিবারের সম্পত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। বলেন, ‘‘ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন হলদিয়ায় কী কী আছে ওর? নন্দীগ্রামে কী কী রয়েছে? কটা পেট্রোল পাম্প? সব জিজ্ঞাসা করুন। জিজ্ঞাসা করুন টাকা কখনও নেয়নি? কিন্তু উত্তর পাবেন না।‘‘
মমতার কথায়, ‘‘একবার কথাচ্ছলেই বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ রে আমাদের সরকার না থাকলে দিঘায় আমাদের ঢুকতে দেবে তো? আমি ভাবছি দিঘায় একটা বাড়ি বানাবো।‘ শুনে বাবু রেগে মেগে গাড়ি থেকে নেমে গেল। আমি ছিলাম, ও ছিল, আর এক সাংবাদিক ছিল সেদিন গাড়িতে।’’
নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করে মমতা বলেন, ’’এখন তো মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট। কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাজ ঠিক করবেন উনি। এক পকেটে বোমা, আরেক পকেটে এজেন্সি। ২৬ হাজারের চাকরি খেয়েছ, একজনের কিছু হলে তোমার বাড়ির সামনে এসে এরা বিচার চাইবে।’’ চাকরিহারাদের আশ্বাস দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ’’আমি আপনাদের পাশে আছি।’’
নন্দীগ্রামের ভোটের ফল নিয়ে তৃণমূল সভানেত্রীর মত, ’’লোডশেডিং করে জিতেছে, আজও মামলা চলছে। ২.৫ বছরেও ফয়সলা হয়নি।’’ বিজেপি বিধায়ককে মমতা খোঁচা, ’’আজ বড় গেরুয়াধারী! বেড়াল বলে মাছ খাব না কাশী যাব।’’ তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, ’’আবাস, ১০০ দিনের টাকা আটকেছে তোর জন্য। নিজে পালিয়ে গেছিস, কিন্তু টিএমসি মাথা নত করে না।’’









































































































































